মুসলিম শিশুদের কেড়ে নিচ্ছে চীন সরকার!
চীনের সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিম সম্প্রদায়ের জাতিগত ধর্মীয় স্বত্তা মুছে ফেলতে দেশটির সরকার সব ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে বলে অভিযোগ দেশটির নির্বাসিত উইঘুর মানবাধিকার কর্মীদের।
এর আগে, বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনের পশ্চিমাঞ্চলের জিনজিয়াং প্রদেশে মুসলিম শিশুদের পরিবার, ভাষা ও তাদের বিশ্বাস থেকে আলাদা করা হচ্ছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।
তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন।
সম্প্রতি চীনের উইঘুর সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি। ১০ মিনিটের ওই প্রামাণ্যচিত্রে উঠে আসে জিনজিয়াং প্রদেশের সংখ্যালঘু এ সম্প্রদায়ের ওপর চীন সরকারে কড়াকড়ি ও কঠোর নিয়ন্ত্রণের চিত্র।
গবেষকদের দাবি, চীন সরকার সুকৌশলে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসিলম শিশুদের পরিবার, ভাষা ও তাদের বিশ্বাস থেকে বিচ্ছিন্ন করছে। একই সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্কদের বিশাল ক্যাম্পে আটকে রাখা হচ্ছে।
বিবিসির এ প্রতিবেদনের পর এবার উইঘুর মুসলিমদের জাতিগত ধর্মীয় সত্ত্বা মুছে ফেলতে চীন সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের অভিযোগ তুলেছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
তুরস্কে নির্বাসিত উইঘুর মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, এ সম্প্রদায়ের জাতিগত পরিচয় মুছে ফেলতে সব আয়োজন করছে চীন। তাদের বর্ণমালা নিষিদ্ধ থেকে শুরু করে ধর্মীয় ঐতিহাসিক স্থাপনা ধ্বংস কোরে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি চীন সরকার বিলুপ্ত করতে চায় বলেও অভিযোগ তাদের।
ইস্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রধান সৈয়দ তুমতুর্ক বলেন, আমাদের ছেলেদের নির্যাতন করা হচ্ছে। মেয়েদের জোরপূর্বক অন্য জাতির ছেলেদের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিশুদের পরিবার থেকে আলাদা করে এতিমখানায় পাঠানো হচ্ছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে লন্ডনে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ধর্মীয় উপগ্রপন্থা ঠেকাতে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লিউ শিয়াউমিং বলেন, কোনো শিশুকেই তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। একদমই না। যদি কেউ বলতে পারেন, তার সন্তান এ ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, নাম বলুন; আমরা তাকে সব ধরনের সহায়তা দেবো। যারা এ ধরনের অভিযোগ করছেন, তারা মূলত সরকার-বিরোধী। আন্তর্জাতিকভাবে চীন সরকারকে হেয় করতেই তারা এ ধরনের বানোয়াট অভিযোগ করছে।
চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় ১ কোটি ৬৬ লাখ ৪ হাজার ৮শ’ ৯৭ হাজার বর্গ কিলোমিটার আয়োতনের জিনজিয়াং প্রদেশে ২১ কোটি ৮ লাখ ১৫ হাজার মানুষের বসবাস। যার ৪৫ শতাংশই উইঘুর সম্প্রদায়ের। যেখানে বহুদিন ধরে বিদেশি সংবাদ কর্মীদের প্রবেশের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে। সৌজন্যেঃ সময় নিউজ