বেসরকারি শিক্ষক সংগঠন গুলোর মধ্যে বৃহত্তর ঐক্যই এনে দিতে পারে সাফল্য

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: ০৯:৪৮ পিএম, ২৯ জুলাই ২০১৯

প্রতীকী ছবি
আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক।আজও আমরা স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে পারলাম না। বৈষম্যের যাঁতাকলে পড়ে আজ আমরা পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আমাদের বাস্তব জীবন সত্যিই হতাশাজনক। বেসরকারি এবং সরকারি এই দুইয়ের মধ্যে রয়েছে বিরাট তফাৎ। সরকারিরা পায় বেতন আর বেসরকারিরা পায় সরকারি অংশ বা অনুদান। সরকারিরা পায় পূণাঙ্গ উৎসব ভাতা আর বেসরকারিরা মূল স্কেলের ২৫ শতাংশ। সরকারিরা বাড়ি ভাড়া পায় ৪০-৬০% আর বেসরকারিরা পায় মাত্র ১০০০ টাকা। সরকারিরা পায় চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা আর বেসরকারিরা পায় মাত্র ৫০০ টাকা। নেই কোন বদলি সিস্টেম, নেই কোন পদন্নোতি। তারপর ও কি বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক আপনারা ঘুমিয়ে থাকবেন? নিজ অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়ে এগিয়ে আসুন। আসুন আমরা বৃহত্তর ঐক্য গঠন করে দাবি আদায়ে সামনে এগিয়ে যাই।

জাতীয়করণ আদায়ের লক্ষ্যে আসুন আমরা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলি। ঐক্য ছাড়া জাতীয়করণ আদায় করা সম্ভব নয়। সম্মানিত বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক বৃন্দ আসুন আমরা বে- শব্দটি থেকে মুক্তির শপথ নেই। জাতীয়করণ আমাদের ন্যায্য অধিকার। ন্যায্য অধিকার আদায়ে ভিন্ন মতামত থাকা উচিৎ নয়।

নির্ভয়ে আমাদের জাতীয়করণ আদায়ে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। ভয়কে করতে হবে জয়। জাতীয়করণ আন্দোলনকে সকলে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। সকল মান অভিমান ভুলে গিয়ে আসুন আমরা দাবি দাওয়া আদায়ে বৃহত্তর ঐক্যের পথে এগিয়ে যাই। ঐক্যই একমাত্র এনে দিতে পারে আমাদের সফলতা। সফলতা পেতে ঐক্য ছাড়া গতি নাই।

আমরা বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক এটাই আমাদের বর্তমান পরিচয়।এই পরিচয় থেকে মুক্তি পেতে জাতীয়করণই একমাত্র সমাধান। জাতীয়করণ ছাড়া মুক্তি নাই। আজ আমরা সমাজ ব্যবস্থায় হেয় প্রতিপন্ন। আমরা চাই নিজের অধিকার এবং যথাযথ সম্মান। বে - শব্দ থেকে মুক্তি না পেলে আমরা কখনো যথাযথ সম্মান পাব না। আমাদের জীবনযাপন আজও মানবেতর। নুন আনতে পানতা ফুরায়।এখন উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অর্ন্তভুক্ত হয়নি এই উন্নয়নে তা সত্যিই বেদনাদায়ক।

দেশের কল্যানে নিবেদিত প্রাণ আজ সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। দিনরাত কাটে সারাক্ষণ হতাশার মধ্য দিয়ে। চাকরির শেষ সময়টুকুতে নেই জীবনের নিরাপত্তা। অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে কাটাতে হয় জীবন। আমরা নিজ অধিকার আদায়ে যদি ভিন্ন ভিন্ন মতামত পোষণ করে ঐক্যের পথ বন্ধ করে দেই। তাহলে এ ব্যাপারে কাকে দোষারোপ করব বলুন? আমাদের মধ্যে এই মুহুর্তে বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন।

একা কারোর পক্ষেই দাবি আদায় করা সম্ভব নয়। আমরা সবাই বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক এটা মনে ধারণ করেই পথ চলতে হবে। কে কোন সংগঠনে আছি তা ভুলে গিয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে? দ্বিমত পোষণ করা মানে নিজের অধিকার আদায়ে পিছিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। প্রাইমারী শিক্ষকরা যদি এক প্লাটফর্মে এসে আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়তে পারে তাহলে আমরা কেন পারব না বলুন?

শিক্ষক সংগঠন গুলোর মধ্যে অনৈক্য থাকার কারণে আমরা বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আজও সফলতা অর্জন করতে পারিনি। যেহেতু দাবি দাওয়া এক তাহলে কেন এই অনৈক্য ?
আমাদের মধ্যে বিভাজন থাকলে দাবি আদায় করা কখনো সম্ভব নয়। কে কোন সংগঠন করেন সেটা বিবেচিত নয়। বিবেচ্য বিষয় হল দাবি আদায়।

আসুন আমরা একবারের মত সংগঠিত হয়ে দাবি আদায়ে এগিয়ে যাই। কেউ আমাদের দাবিকে দাবিয়ে রাখতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখার প্রবণতা বাদ দিয়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সকল শিক্ষককে এক প্লাটফর্মে আসতে হবে। তাহলেই আসতে পারে মুক্তির পথ। আজ পর্যন্ত আন্দোলন ছাড়া কোন দাবিই আদায় হয়নি। আর কখনো আদায় হবে ও না।

তাই সকল বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সংগঠন গুলোকে এক প্লাটফর্মে আসার আহবান রইল। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি নজরুল ঐক্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আপনারা ও সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যের টানে ছুটে আসার আহবান জানাচ্ছি।

মোঃ আবুল হোসেন
সিনিয়র যুগ্ম- মহাসচিব
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি নজরুল
কেন্দ্রীয় কমিটি


পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)