বদলি প্রথার প্রয়োজন কেন ?
মোঃ আবুল হোসেন, নিজস্ব প্রতিনিধি ||
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড শিক্ষক সমাজ। বদলি প্রথা শিক্ষা ব্যবস্থায় এনে দেয় গতিশীলতা। শিক্ষকদের গতিশীল করতে প্রয়োজন বদলি প্রথা। বদলি প্রথার মাধ্যমে শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি পরিবর্তন সম্ভব। শিক্ষকদের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে। নিত্য নতুন পরিবেশে প্রত্যেকে নিজকে মেলে ধরার চেষ্টা করবে। শিক্ষকরা নতুন নতুন তথ্য উপাত্ত জানার চেষ্টা করবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় আসবে আমুল পরিবর্তন। একই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার ফলে নিজের যোগ্যতা যাচাই করা সম্ভব হয় না। বদলি প্রথার মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়। পাঠদান পদ্ধতির ভুল গুলো সংশোধন করা যায়।বেশি দিন দূর দূরান্তে চাকরি করার ফলে শিক্ষকদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। আর এই হতাশার প্রভাব পড়ে শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর। যা শিক্ষা ব্যবস্থায় ধীরে ধীরে স্থবিরতা এনে দিবে।
শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নে তাই বদলি প্রথা একান্ত জরুরি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান প্রক্রিয়ায় গতি সঞ্চার করতে বদলির বিকল্প কিছু হতে পারে না। আমরা বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারি অংশ বা অনুদান সহ যে সামান্য বাড়ি ভাড়া পাই তা দিয়ে সংসারের ভরনপোষণ করাই কঠিন হয়ে পড়ে। সংসার চালানোর টাকা জোগাড় করতে হিমসিম খাচ্ছে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। শিক্ষকদের পিছুটান দূর করতে না পারলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই শিক্ষকদের আগে করতে হবে স্বাবলম্বী। বাড়ি ভাড়ার কথা বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলে সর্বনিম্ন বাড়ি ভাড়া ৪০০০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকা পর্যন্ত। বাংলাদেশ বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বাড়ি ভাড়া পায় মাত্র ১০০০ টাকা। শহরাঞ্চলের বাড়ি ভাড়া সর্বনিম্ন ১০০০০ টাকা থেকে ২৫০০০ টাকা পর্যন্ত। সংসারের ভরনপোষণ করার পর বাকি বাড়ি ভাড়া পাবে কোথায় ? এই বাস্তবতায় শিক্ষকদের বর্তমান সময়ে তাদের অবস্থান কোথায় ?
বর্তমান বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষকরা সর্বোচ্চ সম্মানিত এবং এই শিক্ষকতা পেশায় সব মেধাবীরা নিজ আগ্রহে এগিয়ে আসে। কিন্তু বাংলাদেশের মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে চায় না কারণ বর্তমানে শিক্ষকদের সকল পেশার চাইতে শিক্ষকতা পেশায় সুযোগ সুবিধা কম। মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আনতে হলে প্রয়োজন বৈষম্যবিহীন বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
বর্তমান সময়ে নিজ জেলায় চাকরির সুযোগ না পেয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় সিংহ ভাগ শিক্ষক চাকরি করেন। দূর দূরান্তে চাকরি করার ফলে কারণে অকারণে আজ শিক্ষকরা হচ্ছেন নির্যাতিত। কেউ কেউ আজ হারাচ্ছেন চাকরি। এই বাস্তবতার কারণে আজ বাংলাদেশে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি প্রথা চালু করা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী সহ দায়িত্ব প্রাপ্ত সকল কর্মকর্তা গণের নিকট বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি আপনারা সম্মিলিত ভাবে বদলি প্রথা চালু করার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করে বৈষম্যের বেড়াজাল থেকে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মুক্ত করুন।