তামিমার ঘটনায় রাকিবকে সহায়তা করবে ‘পুরুষ অধিকার সংস্থা’
ক্রিকেটার নাসির তার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী তামিমা এবং তার আগের স্বামী রাকিবকে নিয়ে গণমাধ্যমে চলমান বিতর্ক যখন তুঙ্গে তখন রাকিবের পাশে দাঁড়াচ্ছে পুরুষের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘এইড ফর মেন’। সময়নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম।
তিনি জানান, আমরা মূলত পুরুষদের নিয়ে কাজ করি। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ও গণমাধ্যম থেকে জানা যায়, রাকিব হাসানের স্ত্রী তামিমা তাম্মি তার স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই ক্রিকেটার নাসিরকে বিয়ে করেছেন। এটা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যখন কোনো পুরুষ ভিকটিম হয় আমরা তখন তাদের ঘটনাগুলো বোঝার চেষ্টা করি।
তিনি আরও জানান, গতকাল রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) আমরা রাকিব ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। তার কাগজপত্রগুলোও আমরা এ সময় দেখি। আমাদের এখন পর্যন্ত অবজারভেশনে তাকে (রাকিব) যে ডিভোর্স করা হয়েছে এমন কোনো কাগজপত্র আমরা পাইনি। তো একতরফাভাবে ডিভোর্স করলেও তো ওই মেয়ে ডিভোর্স করে বিয়ে করবে, এই ধরনের কোনো ডকুমেন্টস কিন্তু প্রুফ করে নাই। সেই অর্থে এটা ৪৯৫ ধারাতে একটা অপরাধ হয়। যার শাস্তি সাত বছরের জেল হতে পারে। উনার যদি কোনো আইনি সহায়তা লাগে তাহলে আমরা এ বিষয়ে তাকে লিগ্যাল প্যানেল থেকে সব ধরনের সহায়তা করতে পারব। আমরা তাকে সোশ্যালি এবং লিগ্যালি যতটুকু সাপোর্ট দেওয়া সম্ভব সেটাই দেব।
সময়নিউজকে তিনি আরও জানান, আমাদের কাছে শুধু রাকিবের ঘটনাটাই ফ্যাক্টর তা না। আমরা দেখছি প্রচুর মেয়েরা বিবাহের রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতির যে ফাঁকফোকরটা আছে তা ‘মিস ইউস’ করছে। এতে পুরুষরা ভিকটিম হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনাগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই।
উল্লেখ্য, এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নিচ্ছেন তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেছেন। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তবে জিডির কপি প্রকাশ হওয়ার পর বেরিয়ে এসেছে তামিমার আরেক বিয়ের তথ্য। রাকিবের সঙ্গে সংসার করা অবস্থায় তামিমা আরেকটি বিয়ে করেছিলেন। সেখানে ছয় মাস সংসারও করেছিলেন।
রাকিবের করা জিডিতে এমন তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। জিডিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করেন রাকিব। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যেই তামিমা অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। ছয় মাস সংসার করার পর ফিরে আসে। পরে রাকিবের সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে পার পায়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নতুন করে নাসিরের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হলে রাকিব জানতে পারেন, তামিমা বিয়ে করেছেন।
জিডি করার কারণ উল্লেখ করে রাকিব বলেন, সংসারজীবনে বিবাদীর কাছে অনেক টাকা ও স্বর্ণালংকার রাখা আছে। এমনকি আমাকে তালাকও দেননি। টাকা ও অলংকার চাইলে বিবাদী আমাকে ক্ষতি করবে বলে হুমকি দিয়েছেন। আপাতত কোনো মামলা করবেন না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে রাকিব ও নাসিরের ফোন রেকর্ড। ওই ফোন রেকর্ডে রাকিবকে ফোন করে জিডি করার ব্যাপারটি ধামাচাপা দিতে বলেন নাসির। সেখানে রাকিবের প্রশ্ন ছিল- আপনি কি তামিমা সম্পর্কে সব কিছু জানেন? উত্তরে নাসির হোসেন বলেন, তার সব কিছু জেনেশুনেই আমি তাকে বিয়ে করেছি। তার বাচ্চা আছে, তার আগেও বয়ফ্রেন্ড ছিল সবকিছুই আমি জানি। আপনার বউ আপনার সঙ্গে ভালো থাকলে নিশ্চয়ই আপনার ১১ বছরের সংসার ভেঙে আমার কাছে চলে আসত না।
রাকিব হাসান ও তামিমার কাবিননামায় দেখা যায় ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তিন লাখ টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে হয়। রাকিবের দাবি, গেল ১১ বছরে তার স্ত্রীর পড়াশোনা থেকে শুরু করে জব সবক্ষেত্রেই তিনি সাহায্য করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তার স্ত্রী তামিমা সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে পুলিশে জিডি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলা সমালোচনা আর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে পাত্তা না দিয়ে গুলশানের লেকশোর হোটেলে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হলো নাসির তামিমা জুটির বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। এই সংবর্ধনায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে ছিলেন অনেকে।