শিক্ষকদের বেতন গ্রেডে বৈষম্য নিরসনের প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগের

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: ০৬:৩২ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮

শিক্ষকদের বেতন ও মর্যাদা বৃদ্ধিসহ সরকারের নানা কল্যাণমুখী ও যুগোপযোগী উদ্যোগ সত্ত্বেও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন গ্রেডসহ শিক্ষা খাতের কিছু কিছু ক্ষেত্রে যে বৈষম্য এখনও রয়ে গেছে, আগামী মেয়াদে তা ন্যায্যতার ভিত্তিতে নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ের বলরুমে নির্বাচনী ইশতেহারে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি তরুণদের উদ্দেশে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।

নির্বাচনী ইশতেহার হাতে  আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ছবি : পিআইডি

অঙ্গীকার অনুযায়ী বর্তমান শিক্ষাবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার শুরু থেকেই শিক্ষার অধিকার ও মানোন্নয়নের ওপর অন্যতম অগ্রাধিকার খাত হিসেবে গুরুত্বারোপ করে আসছে। ২০২৩ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষা পাবে দেশের ৯৫ শতাংশ শিশু, এবার এমনটাই পরিকল্পনা। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার চর্চা বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাপত্র তৈরির ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা রয়েছে ২০১৮ খ্রিস্টাব্দের ইশতেহারে। ইশতেহারে বলা হয়েছে, শিক্ষা খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ ও তার কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। শিক্ষা পাঠক্রমের লক্ষ্য হচ্ছে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুসন্ধিৎসা, জ্ঞান আহরণ এবং দেশ ও জাতির অবিকৃত সত্য ইতিহাস জানার অধিকতর সুযোগ সৃষ্টি করা।

শিক্ষার মান উন্নয়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে। ভাষাজ্ঞান ও গণিতজ্ঞানের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের ভাষা ও গণিত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। ইশতেহারে শিক্ষকদের বিষয়ে বলা হয়েছে, শিক্ষক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়োগের একমাত্র মানদণ্ড হবে মেধা, যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নকল পুরোপুরি বন্ধ করার জন্য গৃহীত ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণায় উৎসাহ ও সহায়তা প্রদান করা হবে। এজন্য বাজেট বৃদ্ধি করা হবে। সকল জেলায় অন্তত একটি প্রাইভেট বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে।

মাদরাসা শিক্ষায় ধর্মীয় শিক্ষার সাথে কর্মজীবনের প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রদানের জন্য কারিকুলাম যুগোপযোগী করা হবে। নৃ গোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে প্রয়োজনীয় সকল বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায়ও তাদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে। সকল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রাথমিক স্তর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা পর্যন্ত সকল স্তরের বই ছাপানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রতিবন্ধীদেরও মানবসম্পদে পরিণত করা হবে। বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে নিরক্ষরতার অভিশাপমুক্ত করা হবে। প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। গত এক দশকে প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার শতকরা ২০ ভাগের নীচে নেমে এসেছে। ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ঝরে পড়ার হার শতকরা ৫ ভাগে নামিয়ে আনা হবে। স্কুল ফিডিং সকল গ্রামে, আধা মফস্বল শহরে এবং শহরের নিম্নবিত্তের স্কুলসমূহে পর্যায়ক্রমে সর্বজনীন করা হবে। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে, তা অব্যাহত থাকবে ।
ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানের শুরু হয় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। পরে আওয়ামী লীগের শাসনামলের উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরা হয় তথ্যচিত্রের মাধ্যমে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির আহ্বায়ক সাংসদ আবদুর রাজ্জাকের স্বাগত বক্তব্যের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তারপর মঞ্চে এসে ইশতেহার ঘোষণা শুরু করেন দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ‘দিনবদলের সনদ’, ২০১৪ খ্রিস্টাব্দে ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ এর পর আসন্ন ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইশতেহারের শিরোনাম দেওয়া হয়েছে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’।

মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, কূটনীতিক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন ক্ষমতাসীন দলের ইশতেহার প্রকাশের এই অনুষ্ঠানে।

সৌজন্যেঃ দৈনিক শিক্ষা

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)