এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও প্রাইভেট টিউশনি
কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট বা কোচিংয়ে কোনোভাবে উদ্বুদ্ধ / প্ররোচিত / বাধ্য করাকে অথবা কোনো শিক্ষকের ক্লাসফাঁকি দেয়া / শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চলাকালীন প্রাইভেট টিউশনি বা কোচিংয়ে জড়িত হওয়াকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় আনা জরুরী।
তবে, শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় ও অভিভাবকদের পূর্ণ সম্মতিতে যদি কোনো শিক্ষকের কাছ থেকে পড়াশোনায় বাড়তি হেল্প নেয়, তাহলে জাতির কী মহাসর্বনাশ হয়ে যায়, তা বোধগম্য নয়! শিক্ষায় বিএড, এমএড ইত্যাদি ডিগ্রি ও বিষয়ভিত্তিক নানান প্রশিক্ষণধারী শিক্ষকরা প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না, পারবেন অন্যরা ? টিচিং কৌশল, সৃজনশীল প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন ইত্যাদিতে প্রশিক্ষিত, অভিজ্ঞরা অযোগ্য হলে, যোগ্য হবেন কারা ? তাছাড়া আর্থিক বিষয়টাও তো দেখতে হবে ! কত বেতন - ভাতা পান এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ? ১২,৫০০ টাকা, বিএড সম্পন্নের পর ১৬,০০০ টাকা যার ৬% ই কর্তন করা হয় ! হাউসরেন্ট ১,০০০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকা, উৎসব ভাতা মূল স্কেলের মাত্র ২৫% ! চমৎকার না ! তার উপর আবার নতুন করে জোরপূর্বক আরো ৪% কর্তনের হুংকার ! একটু ভেবে দেখুন তো ! জাতির কারিগরদের জীবন যাত্রার মান কোন পর্যায়ে ?
অভাবগ্রস্ত এই মানুষগুলো দু’চার জনকে প্রাইভেট পড়াবেন, তাতেও সমস্যা ! কেন ? তাঁরা তো কোচিং বাণিজ্য করছেননা, স্কুল/ কলেজ টাইমের বাইরে, অভিভাবকদের পূর্ণ সম্মতিতে, শিক্ষার্থীদের চাহিদায় সীমিত আকারে প্রাইভেট টিউশনি করে থাকেন। তাঁরা তো চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই, ঘুষ- দুর্নীতির মতো অনৈতিক কাজে জড়িত থেকে কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালান্স, বাড়ি- গাড়ি করছেন না ! অফিস ডিউটির বাইরে মেধাশ্রমের বিনিময়ে স্বাভাবিক ভাবেই কিছু পারিশ্রমিক নিচ্ছেন ! তাঁরা অনৈতিক কাজে যেমন জড়াতে পারেননা, আত্মমর্যাদা ও পেশাগত কারণে রিক্সা, ঠ্যালা গাড়িও চালাতে পারেন না ! প্রকৃতপক্ষে দেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এক নিদারুণ অসহায়ত্বের মধ্য দিয়ে পথ চলছেন ! সুতরাং জাতির এই মহান কারিগরদের প্রতি যথাযথ কর্তৃপক্ষের আরো বেশি সহৃদয়, শুভাকাঙ্ক্ষী ও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।
লেখকঃ এ.বি জলিল