কয়েকশত আইসিটি প্রদর্শকদের এমপিওভুক্তির ‘অফিস আদেশ’ জারি করতে ‘স্মারকপত্র’ প্রদান

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: ০৪:১৪ পিএম, ৩১ মার্চ ২০১৯

কয়েকশত আইসিটি প্রদর্শকদের এমপিওভুক্তির ‘অফিস আদেশ’ জারি করতে ‘স্মারকপত্র’ প্রদান

এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা। কিন্তু ১৪/১৫ বৎসর যাবত আমলাতন্ত্রের যাতাকলে এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি মানবেতর জীবনযাপনকারী কয়েকশত আইসিটি প্রদর্শক। পরিত্রাণের শেষ কোথায়?এমপিও ভুক্ত বেসরকারি কলেজে ২০ মার্চ ২০০৫খ্রি. পূর্বে হতে নিয়োগকৃত ও যোগদানকৃত (এমপিও জন্য রীটকৃত ও রীট বিহীন) নন-এমপিও প্রদর্শক আইসিটি (কম্পিউটার শিক্ষা) শিক্ষকগণ কর্মরত আছে।
(সূত্রঃ ষ্ট্যাফিং প্যাটার্নঃ জনবল কাঠামো শিক্ষাঃ মন্ত্রণালয়ের রেজুলিউশন নং শাঃ ৪/৩ বি-৫/৮১/১৪২ তারিখ- ১৭/১১/৮১ইং অনুযায়ী বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ষ্ট্যাফিং প্যাটার্ন ঘোষণা করে। সে মোতাবেক প্রদর্শকগণ নিয়োগ প্রাপ্ত হয়। নিয়োগ বিধিমালাটি যা গত ২০/০৩/২০০৫ইং তারিখ পর্যন্ত বহাল ছিল)। সে মোতাবেক যাদের এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি। সকল নন-এমপিও প্রদর্শক (আইসিটি) শিক্ষক পদে এমপিও ভুক্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ কর্তৃক “অফিস আদেশ’ জারি করা দরকার।

বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে বেসরকারি বিভিন্ন কলেজে উচ্চমাধ্যিক স্তরে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয় চালু হয় (বিদ্যুত সংযোগ, ল্যাব, বিষয় অনুমোদন)। পরবর্তীতে সরকার কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়কে কম্পিউটার শিক্ষা বিষয় নামে সংশোধন করে। ২০১২ খ্রিষ্টাব্দে সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আলোকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (কম্পিউটার শিক্ষা) বিষয়কে আবশ্যিক বিষয় হিসাবে অন্তভুক্ত করে। বিষয়টি পাঠদানের দায়িত্ব পান নিয়োগপ্রাপ্ত উচ্চমাধ্যমিক স্তরে কর্মরত কম্পিউটার শিক্ষা বিষয়ক প্রভাষক ও প্রদর্শক (এমপিও/নন-এমপিও) পদের শিক্ষগণ। তারা অাবশ্যিক বিষয় আইসিটি বিষয়ের শিক্ষক।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজগুলোতে ৪ জন প্রদর্শক (পদার্থ, রসায়ন, জীব বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) প্যাটার্নভুক্ত পদ। নিয়োগ ও এমপিও বিষয়ে নতুন বেসরকারি (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর আলোকে প্যাটার্নভুক্ত হওয়ায় ২৪ এর (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বৃদ্ধিপ্রাপ্ত পদে এখনও শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে কোন অফিস আদেশ জারি হয়নি।

হঠাৎ করে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ থেকে প্রদর্শক আইসিটি (কম্পিউটার শিক্ষা) পদে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর হতে এমপিওভুক্ত হতে পারছে না। দেশের প্রায় কলেজে উচ্চমাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজে ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের আগে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর হতে প্রদর্শক (কম্পিউটার) বিষয়ে পদে ডিজি’র মৌখিক ছাড়ে অসংখ্য এমপিওভুক্ত হয়ে এসেছে। তারপর ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর অতিরিক্ত জনবল কাঠামো ধরে ও সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (কম্পিউটার শিক্ষা) আইসিটি বিষয় প্রদর্শক পদে নতুন কোন এমপিও দেয়নি। তবে এ বিষয়ে প্রদর্শক (কম্পিউটার) বা অন্য পদে যাদের এমপিওভুক্ত হয়েছিল, তাদের এমপিও অধিদপ্তর হতে ষ্টপ পেমেন্ট হলে ভুক্তভোগী প্রদর্শকগণ হাইকোর্টে রিট করলে হাইকোর্টের নির্দেশে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর ’স্টপ পেমেন্ট’দের এমপিও ছাড় করে।

তবে যারা সরকারি বিধি মোতাবেক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রতিনিধির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রদর্শক, কিন্তু এমপিও হয়নি বা এমপিও হবার অপেক্ষায় ছিল, সে ধরণের দেশের প্রায় কয়েকশত এমপিওভুক্ত কলেজে ১৪/১৫ বছর ধরে ননএমপিও প্রদর্শক আছে। তারা এখনও এমপিওভুক্ত হতে পারেননি। কেউ কেউ এমপিওভুক্ত কলেজে প্রদর্শক আইসিটি (কম্পিউটার শিক্ষা) পদে এমপিও জন্য পরবর্তীতে হাইকোর্টের রিট করে নিজেদের পক্ষে রায় পেয়েছে। কিন্তু এর আগে জনবল কাঠামোর বাইরে থাকায় এমপিওভুক্ত না হয়ে অপেক্ষায় ছিল, কখন পদটি সরকার জনবল কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত করে। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (কম্পিউটার শিক্ষা) বিষয়ে প্রদর্শক পদ প্যাটার্নভুক্ত হয়েছে।

২০০৬ খ্রিস্টাব্দে দেশের এমপিওভুক্ত কলেজে প্রদর্শক আইসিটি (কম্পিউটার শিক্ষা) পদে ননএমপিও শিক্ষক হিসাবে হাইকোর্টের এক নম্বর বেঞ্চে দেশে প্রথম রিট হয়। তাদের এমপিও প্রদানে বিচারপতি আব্দুল মতীন ও বিচারপতি এটিএম ফজলে কবিরের বেঞ্চে এমপিওভুক্ত করার জন্য রায় দেয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেয়। তারপর অনেক প্রদর্শক হাইকোর্টে রিট করেও রায় নেন।

নিয়োগ বৈধ। কিন্তু সে সময়কার সরকারি জনবল পদটি অন্তর্ভুক্ত না থাকায় প্রদর্শকরা সরকারি নতুন জনবল কাঠামো প্রণয়নের জন্য অপেক্ষা করে আসছে। বর্তমানে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী প্রদর্শক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (কম্পিউটার। শিক্ষা) প্যাটার্নভুক্ত পদ।

নিম্নমাধ্যমিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত নতুন পদ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় (পূর্বে প্যাটার্ন বর্হিভুত বর্তমানে প্যাটার্ন ভুক্ত) এমপিওভুক্ত করতে ও যে প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নেই নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নিয়োগ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অফিস আদেশ জারি করেছে। ডিগ্রি কলেজে তৃতীয় পদ শিক্ষক পূর্বের নিয়োগকৃতদের (পূর্বে অনেক কলেজে তৃতীয় পদে নিয়োগ দিলেও সরকারি জনবল কাঠামোতে না থাকায় এমপিও হতো না। অনেকে রিটও করেছিল। বর্তমানেও প্যাটার্ন বর্হিভুর্ত) মানবিক দিক বিবেচনা করে সরকার এমপিও প্রদানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় অফিস আদেশ ২৮/০৮/২০১৮ তারিখে জারি করেছে।
তবে এখনও বর্তমান জনবল কাঠামো-২০১৮ প্যাটার্ন ভুক্ত দেশের উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি কলেজ গুলোতে নিয়োগকৃত ২০/০৩/২০০৫ তারিখের পূর্বে নিয়োগকৃত কর্মরত অবশিষ্ট কয়েকশত নন-এমপিও প্রদর্শক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (কম্পিউটার শিক্ষা) বিষয়ে এমপিও ভুক্ত করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অফিস আদেশ জারি হয়নি। মানবেতর জীবনযাপনকারী কর্মরত কয়েকশত প্রদর্শক আইসিটি (কম্পিউটার শিক্ষা) এমপিও প্রদান করতে সরকারের তেমন অর্থ ব্যয় হবেনা।

বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজ নন-এমপিও প্রদর্শক (আইসিটি) শিক্ষক পক্ষ হতে সমন্বয়ক (১), মো. আব্দুস সালাম গত ১২/০৩/২০১৯ তারিখে সচিব মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও গত ২০/০৩/২০১৯ তারিখ মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ৩১/০৩/২০১৯ তারিখে মাননীয় চেয়ারম্যান, জাতীয় সংসদের শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কে এমপিওভুক্ত কলেজ গুলোতে গত ২০/০৩/২০০৫ তারিখের পূর্বে হতে নিয়োগপ্রাপ্ত নন-এমপিও প্রদর্শক, আইসিটি (কম্পিউটার শিক্ষা) পদে কয়েকশত যাদের সকলকে এমপিওভুক্তির ‘অফিস আদেশ’ জারি করার জন্য নথি সহ রেজিষ্ট্রার্ড ‘স্মারকপত্র/আবেদনপত্র’ প্রদান।

১৪/১৫ বছর যাবত মানবেতর জীবনযাপনকারি দেশের এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজ গুলোতে নিয়োগ প্রাপ্ত ও কর্মরত কয়েকশত নন-এমপিও আইসিটি (কম্পিউটার শিক্ষা) প্রদর্শকদের এমপিও ভুক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ হতে অফিস আদেশ জারি করতে বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

লেখক :
মো. আব্দুস সালাম।
প্রদর্শক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি),
জয়লা জুয়ান ডিগ্রি কলেজ,
শেরপুর, বগুড়া।

সমন্বয়ক-১
বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত বেসরকারি কলেজ নন-এমপিও প্রদর্শক (আইসিটি) শিক্ষক,
বাংলাদেশ।

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)