পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসের ঘোষণা চাই

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: ০৮:০২ পিএম, ৯ মে ২০১৯

মোঃ আবুল হোসেন

দেশ স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এখনো পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পায়নি পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার স্বাদ। এক যুগের ও বেশি সময় পার হয়ে গেল তবুও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ঈদ বোনাস ২৫ শতাংশের কোন পরিবর্তন বা পরিবর্ধন কিছুই হলো না। বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেহেতু শিক্ষা বান্ধব তবুও কেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ঈদ বোনাস ২৫ শতাংশ রয়ে গেল তা বোধগম্য নয়? বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আশায় বুক বেধে ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিভাজন মুক্ত করবে। বৈষম্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থা জাতিকে উপহার দিবেন। কিন্তু তার অবসান আর হলো না বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাগ্যকাশে।সেই ঈদ বোনাস মূল স্কেলের ২৫ শতাংশের পরিবর্তন হলো না বর্তমান সময়ে এটা কোন মতেই মেনে নেয়া যায় না । দিন অতিবাহিত হবে নিয়ম পরিবর্তন হবে এটাই স্বাভাবিক ।কিন্তু দেখা যাচ্ছে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হলো না। যে অবস্থায় ছিল আজও সেই অবস্থায়ই রয়ে গেল বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রয়োজন শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য দূরীকরণ। সরকারি এবং বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মাঝে ঈদ বোনাসের সমতায়ন করা। ঈদ বোনাসের সমতায়ন ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসের ব্যবস্থা করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।শিক্ষকরাই জাতি গঠনের কারিগর। শিক্ষক ছাড়া উন্নত দেশ গঠন সম্ভব নয়। যাদের পরিশ্রমে দেশের উন্নয়ন সাধিত হয়। তাদেরকে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখে প্রকৃত শিক্ষা আশা করা যায় না। প্রতিটি পেশার মানুষ যেখানে পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস পায় । অন্যদিকে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ পায় মাত্র মুল স্কেলের ২৫ শতাংশ । যা সত্যিই শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য কল্যাণকর নয়। যেখানে শিক্ষকরাই জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাদের মধ্যে বিভাজন থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন কখনো সম্ভব নয়। তাতে শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় নিবেদিত প্রাণ যাদের তাদের অবমূল্যায়ন করা কতটুকু যুক্তি যুক্ত তা সচেতন নাগরিকদের মধ্যে এমন প্রশ্ন নাড়া দিয়ে উঠেছে।
আমরা কি বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় এখনো সমমর্যাদা পাব না? আজ বঙ্গবন্ধু বেচে থাকলে শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন বৈষম্য থাকত না। সবাই পেত সমমর্যাদা। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শিক্ষা ব্যবস্থার বিভাজন মেনে নেয়া বড়ই কষ্টের ব্যাপার। শিক্ষা ব্যবস্থায় ঈদ বোনাসের মধ্যে পার্থক্য থাকার কারণে শিক্ষকদের মাঝে মিশ্র প্রতি ক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে।হতাশাগ্রস্ত হচ্ছে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ। শিক্ষকরা আজও পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস থেকে বঞ্চিত এটা স্বপ্নের মত লাগে।

দেশে নেই কোন রকম হাহাকার, নেই কোন অভাব অনটন তবুও পরিবর্তন হচ্ছে না বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জীবন । দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে পৃথিবীর ইতিহাসে মধ্যম আয়ের দেশে। কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা শুধু আজ পিছিয়ে যাচ্ছে অবিভাবকের অভাবে। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দেখবার করার কেউ নেই। আমরা কি পাচ্ছি আর কি পাচ্ছি না তাও কর্তৃপক্ষ জানে না? পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ২৫ শতাংশের পরিবর্তে ১০০ শতাংশ ঈদ বোনাসের জোর দাবি জানাচ্ছি। জানি না এই দাবি কর্তৃপক্ষের নিকট পৌঁছাইবে কিনা। তবুও আমি একজন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক হিসেবে কর্তৃপক্ষের নিকট বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি আপনারা এই বিষয়টি সুবিবেচনায় নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসের ব্যবস্থা করুন। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বৈষম্য মুক্ত করুন। আর কতকাল বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অবহেলিত হয়ে জীবন যাপন করবে।কেউ কি বলতে পারেন?

বর্তমান সময়ে প্রতিটি দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এই সামান্য ঈদ বোনাসের টাকা দিয়ে কি করা যায় বলুন সচেতন নাগরিক বৃন্দ? তাইতো আমাদের জীবন যাত্রার মান দ্রব্যমূল্যের নীচেই চাপা পড়ে রইল। তা থেকে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আর বের হতে পারলাম না। জীবন যাপন করতে হয় দ্রারিদ্র সীমার নীচে। পরিচয় শুধু আমরা বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক এ ছাড়া আর কিছুই নয়। তাইতো বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ঈদ মানেই জীবনটা দেনায়ডুবা। এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত। নতুবা শিক্ষকদের মাঝে পাঠদানের স্পীড কমে আসবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় এই বৈষম্য সত্যিই দুঃখজনক। শিক্ষা ব্যবস্থায় আগে শুনে এসেছি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ঈদ বোনাস পায়নি। কিন্তু তাও এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পাচ্ছে মাত্র মুল স্কেলের ২৫ শতাংশ। বর্তমান যুগ কিন্তু ডিজিটাল যুগ এ যুগেও এই সামান্য ঈদ বোনাস দেওয়া হয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের তা বড়ই হতাশাজনক।

দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছে গেছে কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সেই এনালগ যুগেই রয়ে গেল। হলো না কোন উন্নতি। উন্নয়নের জোয়ারে এখন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ডুবে যাচ্ছে অতল সাগরে কেউ নেই হাত ধরে তোলার আছে শুধু কীভাবে ডুবানো যাবে? সবারই বেতন বোনাস বৃদ্ধি পায় কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শুধু পরিবর্তন হয় না। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেলায় বেতন কমে। বোনাস তো আছে নাম মাত্র। বেসরকারি শিক্ষকদের জীবন যাপনের নেই কোন সীমা রেখা। জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি পেয়েছে সত্যি। কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য নয়। বর্তমান সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলার কোন পথ নেই। অভাব অনটনে পিছু ছাড়ছে না কোন মতে।এই সামান্য বেতন বোনাস দিয়ে পরিবারের ভরনপোষণ করা আজ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে এমন কোন পদক্ষেপ ও দেখা যাচ্ছে না । বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আজ অবিভাবকহীন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ এই যে, আপনি বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসের ঘোষণা দিয়ে জাতিকে বিভাজনের হাত থেকে রক্ষা করুন।

লেখকঃ মোঃ আবুল হোসেন
কুকুটিয়া কে, কে, ইনস্টিটিউশন
শ্রীনগর, মুন্সিগঞ্জ
সিনিয়র যুগ্ম- মহাসচিব
বাশিস ( নজরুল)

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)