শিক্ষার্থীদের নূন্যতম শাস্তির বিধান থাকা উচিৎ
বর্তমান সময়ে আমাদের দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থী কতৃক শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার প্রবনতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এটা থেকে পরিত্রানের পথ না খুজলে অদূর ভবিষ্যতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিরাজমান নৈরাজ্য চরম আকার ধারণ করবে,এবং জাতি এক সময় শিক্ষক সংকটে পরবে।এ পেশার প্রতি এখন বিভিন্ন কারনে মেধাবীরা অনিহা প্রকাশ করতে শুরু করেছে তার পর আবার শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা প্রকট আকার ধারন করেছে।
শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার পিছনে অনেক কারন আমরা দেখতে পাচ্ছি। তবে তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য কয়েকটি কারন আমি তুলে ধরার চেষ্টা করছি।প্রথমেই আমি বলবো বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার নীতিমালা শুধু মাত্র শিক্ষার্থী কেন্দ্রীক। সব ধরনের সুযোগ সুবিধা শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক রক্ষার কোনো নীতিমালা নাই।শিক্ষার্থীদেরকে নূন্যতম শাসন ব্যবস্থা পর্যন্ত আজ তুলে দোওয়া হয়েছে,শিক্ষার্থীদের দৈহিক শাস্তি তো দেওয়াই যাবে না,এমন কি কোনো কথার মাধ্যমেও তাদেরকে শাসন করারও সুযোগ নাই। যদি এই হয় অবস্থা, তাহলে ঐসব শিক্ষার্থীর আর ভাবনা কি? তারা তাদের মত চলে, পড়া লেখারও কোনো প্রয়োজন নাই। তাদের ইচ্ছের জয় হয়েছে আর বৃদ্ধি পেয়েছে শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটান।শিক্ষক নিরাপত্তার কোনো নীতিমালা তৈরী হয় না শুধু শিক্ষার্থীকে সন্ত্রাসী বানানোর নীতিমালা তৈরী হয়। সে দেশে শিক্ষক লাঞ্ছিত হবে না কেনো?
এছাড়া বর্তমান পাবলিক পরীক্ষাতে পাশের সীমানা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে, কাম্য সংখ্যক পরীক্ষার্থী পাশ না করলে MPO বাতিল করা হয়।যার ফলে শিক্ষার্থী থেকে বেশি ভাবনা এখন শিক্ষকদেরই ভাবতে হয়।এই কারণে শিক্ষকদের পাশ করানোর জন্য বিভিন্ন ভাবনা ভাবতে হয়।তখন আর সৎ এবং অসৎ সেই চিন্তা না করে পরীক্ষার্থীদের পাশ করানোর নানা উপায় খুঁজতে হয়।যার ফলশ্রুতি আজকের শিক্ষক লাঞ্ছনা বৃদ্ধি।শিক্ষার্থীরা ধরেই নিয়েছে পাশ করানোর সম্পূর্ণ দায়িত্ব শুধুই শিক্ষকদের, তাদের কোনো দায়বদ্ধতা বা অধ্যবসায় কোনটি এখন আর তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন, যা র কারণেও শিক্ষককে লাঞ্ছিত হতে হয়।
আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি প্রথার কারণে লাঞ্ছিত হচ্ছে শিক্ষক।শিক্ষকদেরকে যারা পরিচালিত করে তাদের বেশির ভাগই মাধ্যমিকের গন্ডি পেরুতে পারেনি।তারা শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ছাড়া কি বা করতে পারে?
এছাড়া আরো বেশ কিছু কারণ আছে। তবে আমি মনে করি উপরে উল্লেখিত কারণ গুলোই শিক্ষক লাঞ্ছিত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।তাই আমি মাননীয় কতৃপক্ষকে দৃষ্টি আকর্ষন করে বলছি অতিদ্রুত উক্ত সমস্যা গুলোর সমাধান করে বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের নূন্যতম শাসন ব্যবস্থার নীতিমালা করে শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং শিক্ষক সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন।
লেখকঃ
মোহাম্মদ মোকাররম হোসেন (আপন)।
সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি,
চট্টগ্রাম বিভাগ।
( মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয় )