বেসরকারী শিক্ষা ব্যবস্থা জাতির জন্য হতাশার
বেসরকারী শিক্ষা ব্যবস্থা এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের জন্য চরম দু:খ জনক।দেশ স্বাধীনের প্রায় ৫০ বৎসর পূর্তির মহেন্দ্র ক্ষনে দাঁড়িয়েও এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার করুন পরিনতি গোটা জাতিকে শুধু হতাশই করেনি বরং জাতির বিবেকের হৃদয় সাগরে বইছে রক্তের প্রবাহ!এই রক্ত প্রবাহ কি কোনো দিন অবন্ধ হবার নয়? কিসের এতো সমস্যা? নাকি অবহলা? নাকি কোনো গভীর ষড়যন্ত্রে নিমজ্জিত এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা? বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে যখন দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে এ দেশের অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি,পররাষ্ট্রনীতি,সংস্কৃতি সহ যাবতীয় বিষয় তখন শত বর্ষ পিছিয়ে আছে এ দেশের শিক্ষা নীতি।
ভাবতে অবাক লাগে, যেখানে জাতি উন্নয়নের প্রধান ও একমাত্র হাতিয়ার হচ্ছে উপযুক্ত ও উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার উপর।সেখানে কিভাবে শিক্ষাখাতকে অবহেলিত রেখে উন্নত জাতি ও দেশ গড়ার স্বপ্ন শতভাগ সফলতা অর্জন করা সম্ভব।শিক্ষিত জাতি জাতির জন্য জন শক্তিতে পরিণত করে দেশকে এগিয়ে নিতে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখে।প্রতিষ্ঠিত হয় মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার।আজও কেনো মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম করতে হয়? জাতীয় স্বার্থে সব কিছুর উর্দ্ধে থেকে এ দেশের সকল শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করা এখন সময়ের দাবি।
এ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ হলে রাষ্ট্রের তো কোনো ক্ষতি হবেই না বরং অগনিত ভালো দিক নিহীত রয়েছে। নিম্নে জাতীয়করণে রাষ্ট্রের কিছু ভালো দিক তুলে ধরার চেষ্টা করছি:
#দরিদ্র জনগোষ্ঠির মধ্যে লেখা পড়ার প্রবনতা বৃদ্ধি পাবে।
#দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ঝরে পরা বন্ধ হবে।
#দরিদ্র জনগোষ্ঠির উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হবে।
#সরকার ঘোষিত গ্রাম অঞ্চল শহরে রুপান্তর করার কাজ শতভাগ সম্পন্ন হবে।
#সামগ্রিক উচ্চ শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাবে।
#দরিদ্র জনগোষ্ঠি অর্থনৈতিক ভাবে উপকৃত হবে।
#ধ্বনি দরিদ্রের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর হবে।
#শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সকল বৈষম্যের অবসান হবে
#প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত লেখা-পড়া উপযোগী পরিবেশ তৈরী হবে।
#বেসরকারী শিক্ষকরা অর্থনৈতিক মুক্তি পাবে।
# শিক্ষকরা পাঠদানে আন্তরীক হবে।
#বেসরকারী শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাব।
#দেশ শিক্ষিত জন শক্তিতে রুপান্তরিত হবে।
#উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মানের কাজ সহজ সাধ্য হবে।
#শিক্ষিত জনগোষ্ঠী রাষ্ট্রের সহায়ক শক্তি অর্জনে ভূমিকা রাখবে।
#বিশ্বের দরবার জাতি হিসবে বাংলাদেশীরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারবে।
#সরকারী কোষাগারে অর্থ বৃদ্ধি পাবে।
#প্রতিষ্ঠানের অর্থনেতিক জটিলতা দূর হবে।
#দরিদ্র মুক্ত দেশ গঠিত হবে।
#সরকারের প্রতি দেশের প্রতিটি নাগরিকের আস্থা বাড়বে।
#মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় আসতে আগ্রহী হবে, ফলে শিক্ষার মানন্নোয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখনে।
#শিক্ষকদের উপর ম্যানেজিং কমিটির নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধ হবে।
#স্থানীয় ম্যানেজিং কমিটির দৌরাত্মতা কমবে।
#স্থানীয় উৎশৃঙ্খল বখাটেদের থেকে শিক্ষার্থী নির্যাতন, নিপীড়ন ও হ্রাস পাবে।
#দরিদ্র অভিভাবকের মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসবে।
#শহর ও গ্রামের বৈষম্যের অবসান হবে।
#ফলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মানে শতভাগ সফলতা আসবে।
#সকল বেসরকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের মাধ্যমেই দেশের বিরাজমান সকল বৈষম্য দূর হবে এবং জাতি ও দেশ উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করবে।
#জাতির জনকের অপূরণীয় স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
#তাই বলা যায় জাতীয়করণ শুধু শিক্ষকদের স্বার্থে নয় গোটা জাতি ও দেশের স্বার্থেই বেশি প্রয়োজন।
#সর্বোপরি মানুষের প্রধান একটি মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
তাহলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেসরকারী রেখে, আমরা এতো সুবিধা থেকে কেনো বঞ্চিত হবো? জাতি হিসেবে কেনো আমরা পিছিয়ে থাকবো?আমরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই।জাতির জনকের স্বপ্ন পূরন করতে চাই।এটা আমাদের অধিকার।সোনার বাংলা গড়ার অংগীকার পূরন করতে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ অপরিহার্য্য।
অতএব,উপরের বিষয়গুলো বিবেচনা পূর্বক,সকল বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আগামী ২০১৯/২০ অর্থ বাজেটেই জাতীয়করণের ঘোষনা দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন, জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নত দেশ ও জাতি গঠনের পরিকল্পনা শতভাগ পূরণ করবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।
লেখকঃ
মোহাম্মদ মোকাররম হোসেন(আপন),
শিক্ষক ও কলামিস্ট,
সাধারণ সম্পাদক,
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি( নজরুল)।
চট্টগ্রাম বিভাগ।
(মতামত প্রকাশের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়)