২০২০ সালে শুরু হবে ধারাবাহিক মূল্যায়ন যাচাই
দেশে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০২০ সাল থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়ন যাচাই হবে। শুরুতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে এই কর্মসূচি চালু করবে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)। পর্যায়ক্রমে সপ্তম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পরিচালিত হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
মাউশি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ আগস্ট থেকে আট জেলার ১৬ উপজেলার ৬৪টি বিদ্যালয়ে তিন মাসব্যাপী এ কর্মসূচি শুরু করে মাউশি। এরইমধ্যে সারাদেশে ধারাবাহিক মূল্যায়ন যাচাইয়ে কর্মসূচি চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
‘শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য’ ও ‘চারু ও কারুকলা’—এ দু’টি বিষয়ে পরীক্ষা না নিয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা হয় আগেই। এরপর থেকে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মূল্যায়ন না করার অভিযোগ ওঠে। এ কারণে এ দু’টি বিষয়েও ধারাবাহিক মূল্যায়নের কার্যকারিতা যাচাইয়ে পাইলট কর্মসূচির উদ্যোগ নেয় মাউশি।
এ প্রসঙ্গে মাউশির পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান বলেন, ‘মুখস্থবিদ্যার মাধ্যমে গুণগত শিক্ষায় যাওয়া সম্ভব হবে না। জিপিএ-৫ আর পরীক্ষায় ভালো ফল দিয়েও সম্ভব নয়। তাই দেশব্যাপী প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক মূল্যায়নে যেতে হচ্ছে। পাইলটিং থেকে আমরা ভালো ফল পেয়েছি। সারাদেশে কর্মসূচি পরিচালিত হলে শিক্ষার্থীদের ওপর যেমন চাপ কমবে, তেমনি লেখাপড়ার মান বাড়বে।’
সূত্র জানায়, কর্মসূচির আওতায় প্রতিটি বিদ্যালয়ে শারীরিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ে ২০ থেকে ২১টি ক্লাস নেওয়া হবে। প্রত্যেক ক্লাসের সময় হবে ৫০ মিনিট। দ্বিতীয় শিফটের বিদ্যালয় হলে দ্বিতীয় শিফটেও এ কার্যক্রম চলবে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে একটি সেকশন থাকলে ৩টি ক্লাস এবং ২টি সেকশন হলে ৬টি ক্লাস নেওয়া হবে। ক্লাস শিডিউল অনুযায়ী ক্লাস পরিচালনা করতে হবে অথবা সুবিধা অনুযায়ী রুটিন পরিমার্জন করে ক্লাস নিতে হবে। বিদ্যালয়ে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক না থাকলে ওই বিষয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক দিয়ে এ কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা থাকবে।
মাউশির পাইলটিং কর্মসূচিতে প্রত্যেক জেলায় চারটি বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয় এবং আরও চারটি বিদ্যালয়ে চারু ও কারুকলা বিষয়ের ধারাবাহিক মূল্যায়ন করা হয়। চারটি বিদ্যালয় নিয়ে একটি ক্লাস্টার গঠন করতে প্রতিটি জেলা থেকে দু’টি বিদ্যালয় নেওয়া হয়। কর্মসূচি সুষ্ঠু পরিচালনায় বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট, সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ) ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ম্যানুয়াল তৈরি হয়।
দেশব্যাপী পরিচালিত ধারাবাহিক মূল্যায়নের কার্যকারিতা যাচাই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে পাইলটিং কর্মসূচির মতোই। একগুচ্ছ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে একটি ক্লাস্টার গঠন করা হবে। শিক্ষকরা অন্য স্কুলের শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়ন যাচাই করবেন। চার জন শিক্ষক একজন শিক্ষার্থীর ধারাবাহিক মূল্যায়ন যাচাই করে নম্বর দেবেন। এজন্য মাউশি একটি সফটওয়ার তৈরি করবে। চার জন শিক্ষক যে নম্বর দেবেন, তা সফটওয়্যারের মাধ্যমে কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে। নম্বর পরিবর্তন বা ঘষামাজার সুযোগ থাকবে না বলে জানান পরিচালক (মাধ্যমিক) ড. আবদুল মান্নান।