উত্তর প্রদেশে শতবর্ষী মসজিদ ভাঙল প্রশাসন
উত্তর প্রদেশের বারাবাঙ্কিতে একশ বছরের পুরনো মসজিদ ভাঙল প্রশাসন। তাদের দাবি, মসজিদটি বেআইনি ছিল।
প্রশাসন জানিয়েছে, স্থানীয় আদালতের নির্দেশে সোমবার রাতে তা ভেঙে দেয়া হয়।
কিন্তু প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রবল বিরোধিতা করেছে মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এবং সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড। তাদের দাবি, প্রশাসন বেআইনি কাজ করেছে, যারা মসজিদ ভেঙেছে, তাদের শাস্তি দিতে হবে।
মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সাধারণ সম্পাদক মৌলানা খালিদ সইফুল্লা রেহমানি বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ”রাম সুনেহি ঘাট তহশিলের একশ বছরের পুরনো গরিব নওয়াজ মসজিদ কোনো আইনি বৈধতা ছাড়াই গত সোমবার রাতে প্রচুর পুলিশ নিয়ে প্রশাসন ভেঙে দিয়েছে।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ”এই মসজিদ নিয়ে কোনো বিরোধ ছিল না। এটি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডের তালিকায় ছিল। রাম সুনেহি ঘাটের এসডিএম মসজিদ কমিটির কাছ থেকে কাগজপত্র চেয়েছিলেন। মসজিদ কমিটি তখন এলাহাবাদ হাইকোর্টে যায়। কিন্তু কোনো নোটিশ ছাড়াই মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছে।”
তার দাবি, ”হাইকোর্টের বর্তমান বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে এবং দোষী অফিসারদের সাসপেন্ড করতে হবে। ভেঙে দেয়া মসজিদের ইট-পাথর নিয়ে যাওয়া যাবে না। সেখানে কোনো নতুন কাঠামো করা যাবে না।” তিনি বলেছেন, ”এখন ওই জায়গায় একটি মসজিদ তৈরি করে তা মুসলিমদের হাতে দেয়া সরকারের কর্তব্য।”
তবে জেলা শাসক আদর্শ সিং জানিয়েছেন ”আবাসিক এলাকায় ওই মসজিদ বেআইনি ছিল।” এক বিবৃতিতে জেলাশাসক বলেছেন, ”গত ১৫ মার্চ ওই মসজিদের মালিকানা সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেখা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু নোটিশ পাওয়ার পর তারা পালিয়ে যান।”
জেলাশাসকের দাবি, ”এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনউ বেঞ্চ গত ২ এপ্রিল এই সংক্রান্ত একটি আবেদন খারিজ করে দেয়। এটাই প্রমাণ করে যে মসজিদ বেআইনি ছিল।” তার দাবি, ”রাম সুনেহি ঘাটের সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটি মামলা দায়ের করা হয়। গত ১৭ মে তার নির্দেশ পালন করেছে প্রশাসন।”
উত্তর প্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এই ঘটনার নিন্দা করে বলেছে, ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়েছে। ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান জুলফিকার ফারুকি বলেছেন, ”এই মসজিদ ছিল তহসিল চত্বরের কাছে। এই মসজিদ ভাঙা বেআইনি কাজ। আমরা এর প্রতিবাদ করছি। আমরা আদালতেও যাব।”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্টে বলা হয়েছে, হাইকোর্ট গত ২৪ এপ্রিল জানিয়েছিল, ৩১ মে পর্যন্ত রাজ্য উচ্ছেদ, ও ভাঙার কোনো নির্দেশ কার্যকর করা যাবে না। হাইকোর্ট, জেলা কোর্ট ও নিম্ন আদালত যে নির্দেশ আগে দিয়েছে, তা পালন করা হয়নি। ৩১ মে-র আগে সেগুলি রূপায়ণ করা যাবে না। একটি জনস্বার্থ মামলার রায়ে এই কথা জানিয়েছিল হাইকোর্ট।
সৌজন্যেঃ বাংলাদেশ টুডে