ছবির মানুষটি সামনে আসছে না দূরে যাচ্ছে? উত্তর বলে দেবে, আপনি মানসিকভাবে নারী না পুরুষ
নারী ও পুরুষের মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে কয়েক দশক ধরে গবেষণা চালাচ্ছেন স্নায়ুবিজ্ঞানীরা। প্রখ্যাত স্নায়ুবিজ্ঞানী ড্যাফনা জোয়েল তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে একটি পাঠ্যক্রমও চালু করেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে একটি দৃষ্টিভ্রমের ছবি।
ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, অন্ধকার সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে একটি আলোর দ্বার। তার মধ্যেই ছুটছে একটি মানুষের অবয়ব। তবে হঠাৎ করে দেখে বোঝার উপায় নেই, এই ছবির অবয়বটি দৌড়ে সামনের দিকে আসছে না দূরে চলে যাচ্ছে।
বিভিন্ন মানুষ এই ছবিটি দেখে ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারেন। কারও মনে হতে পারে, দৌড়ে সামনের দিকেই আসছে ওই ছবির মানুষ। আবার কারও মনে হতে পারে সামনে নয়, বরং দৌড়ে দূরে চলে যাচ্ছে ওই ছায়ামানুষ। তবে আপনি কী দেখছেন, তার ওপরেই নাকি নির্ভর করছে মানুষ হিসেবে আপনি কেমন। আপনার ভাবনা-চিন্তাই বা কী রকম।
ছবিটি প্রথম প্রকাশ করে ‘ফ্যাক্ট ফ্যাক্টরিজ’ নামক একটি সংস্থা। এই সংস্থার দাবি, আপনি এই ছবিতে কী দেখছেন তার ওপর নির্ভর করে আপনার মস্তিষ্ক পুরুষের নাকি মহিলার।
ফ্যাক্ট ফ্যাক্টরিজ-এর মতে আপনি যদি দেখেন, এই পুরুষাবয়ব আপনার দিকে ছুটে আসছে তা হলে আপনার পুরুষ-সুলভ মস্তিষ্ক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। এই ছবিতে আপনি কী দেখছেন তার ওপর নির্ভর করছে আপনার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও। সাধারণত যারা এই মানুষটিকে সামনের দিকে ছুটে আসতে দেখছেন, তাদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করার দক্ষতা অনেক বেশি বলেই মনে করা হয়। যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যবহার করে জীবনের সমস্যার সমাধান করার প্রবণতাও এই মানুষগুলির মধ্যে অনেক বেশি। একই সঙ্গে তারা বিভিন্ন বিষয়ে কৌতূহলীও হন। সমস্ত জিনিস খুব দ্রুত শিখতেও পারদর্শী তারা। পাশাপাশি এই সব ব্যক্তিত্ব জীবনের কঠিন বাধাগুলির মোকাবিলা করতে ভালোবাসেন। কোনো জিনিস হাতের মুঠোয় না আসা পর্যন্ত হাল ছাড়েন না তারা। সমস্ত বিষয়েই প্রকাশ পায় তাদের দৃঢ় মতামত।
অন্য দিকে আপনি যদি দেখেন, ছবিতে থাকা অবয়ব দূরের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে তা হলে আপনার মহিলা-সুলভ মস্তিষ্ক হওয়ার প্রবণতা বেশি। তার মানে, এই মানুষগুলির বিশ্লেষণাত্মক দক্ষতা এবং যুক্তি ব্যবহার করার প্রবণতা সর্বোচ্চ। এই ধরনের মানুষেরা তাদের ইন্দ্রিয় এবং যুক্তির ওপর নির্ভর করেন। সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়ও কোনো রকম তাড়াহুড়ো করেন না। এই ধরনের মানুষেরা খুবই সৃজনশীল হন। পাশাপাশি এই মানুষদের একই সঙ্গে অনেকগুলি কাজ করার দক্ষতা থাকে এবং এদের স্মৃতিশক্তিও প্রখর হয়।
তবে নারী ও পুরুষের মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে কয়েক দশক ধরে গবেষণা চালাচ্ছেন স্নায়ুবিজ্ঞানীরা। প্রখ্যাত স্নায়ুবিজ্ঞানী ড্যাফনা জোয়েল তেল আভিভ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে একটি পাঠ্যক্রমও চালু করেন। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়ে গেছে। কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন, লিঙ্গের ওপর নির্ভর করে মানুষের মস্তিষ্ক কেমন হবে তা বিচার করা উচিত নয় এবং এমন ভাবার মতো যথাযথ প্রমাণ এখনও নেই বলেই বিজ্ঞানীদের একাংশের মত।
তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা