একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির তারিখ ঘোষণা
আগামী ১২ মে থেকে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। আর ক্লাস শুরু হবে আগামী ১ জুলাই থেকে। রোববার এ সংক্রান্ত নীতিমালা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।১২ মে থেকে সারাদেশের সরকারি-বেসরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে। আর ক্লাস শুরু হবে আগামী ১ জুলাই থেকে। রোববার এ সংক্রান্ত নীতিমালা নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানা যায়, এবার আটটি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড থেকে ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে মাধ্যমিক উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবেন।
অন্যদিকে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালে উত্তীর্ণরা একাদশে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স হবে ২২ বছর।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাধ্যতামূলকভাবে অনলাইনে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে হবে।এর (www.xiclassadmission.gov.bd) পাশাপাশি টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস করে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন করা যাবে।
আগামী ১২ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত অনলাইন ও টেলিটক মোবাইল থেকে এসএমএস-এর মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। যারা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন তাদেরকেও এই সময়ের মধ্যে আবেদন করতে হবে।
২৪ থেকে ২৬ মের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবেদন যাচাই-বাছাই ও আপত্তি নিষ্পত্তি করা হবে। পুনঃনিরীক্ষণে যাদের ফল পরিবর্তন হবে তারা ৩ থেকে ৪ জুন পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। পছন্দক্রম পরিবর্তন করা যাবে ৫ জুন থেকে।
১০ জুন প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করা হবে। প্রথম তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ১১ থেকে ১৮ জুন সিলেকশন নিশ্চয়ন (যে কলেজের তালিকায় নাম আসবে ওই কলেজেই যে শিক্ষার্থী ভর্তি হবেন তা এসএমএসে নিশ্চিত করা) করতে হবে। ২১ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে এবং ২৫ জুন তৃতীয় পর্যায়ের ফল প্রকাশ করা হবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা ২২-২৩ জুন সিলেকশন নিশ্চয়ন এবং তৃতীয় পর্যায়ে তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীদের ২৬ জুন সিলেকশন নিশ্চয়ন করতে হবে। ২৭ থেকে ৩০ জুন শিক্ষার্থী ভর্তি শেষে আগামী ১ জুলাই ক্লাস শুরু হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, অনলাইনে ১৫০ টাকা ফি জমা দিয়ে সর্বনিম্ন ৫টি এবং সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে পছন্দক্রমের ভিত্তিতে আবেদন করা যাবে।
প্রতি কলেজের জন্য ১২০ টাকা ফি দিয়ে সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
একজন শিক্ষার্থী যতগুলো কলেজে আবেদন করবে তার মধ্য থেকে শিক্ষার্থীর মেধা ও পছন্দক্রমের ভিত্তিতে একটি মাত্র কলেজে তার অবস্থান নির্ধারণ করা হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, “বিভাগীয় এবং জেলা সদরের কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কলেজের শতভাগ আসন সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে যা মেধার ভিত্তিতে নির্বাচন করা হবে। মেধার ভিত্তিতে ভর্তির পরে যদি বিশেষ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কোনো আবেদনকারী থাকে তাহলে মোট আসনের তিরিক্ত ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য, ৩ শতাংশ বিভাগীয় ও জেলা সদরের বাইরের শিক্ষার্থীদের জন্য, ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্ত দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী এবং স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্দের সদস্যদের সন্তানদের জন্য, ০.৫০ শতাংশ বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য এবং ০.৫০ শতাংশ প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।”
তবে উপযুক্ত কোটায় যদি প্রার্থী পাওয়া ন যায় তবে এ আসন কার্যকর থাকবে না।
বিজ্ঞান শাখা থেকে উত্তীর্ণরা যে কোনো বিভাগে ভর্তি হতে পারবে। মানবিক শাখা থেকে উত্তীর্ণরা মানবিকের পাশাপাশি ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি হতে পারবে। ব্যবসায় শিক্ষায় শিক্ষার্থীরা ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।
জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে মেধাক্রম নির্ধারণ করা হবে।
বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের মেধাক্রম সাধারণ গণিত, উচ্চতর গণিত অথবা জীববিজ্ঞানে প্রাপ্ত জিপিএ বিবেচনায় আনা হবে।
এরপরেও একই নম্বরপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের ভর্তির বিষয়ে সুরাহা না এলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, পদার্থ বিজ্ঞান ও রসায়নে প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনায় আনতে হবে।
আর মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে সমান জিপিএ প্রাপ্তদের ভর্তির ক্ষেত্রে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলায় অর্জিত গ্রেড পয়েন্ট বিবেচনা করা হবে।
এক বিভাগের প্রার্থী অন্য বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে মোট গ্রেড পয়েন্ট একই হলে পর্যায়ক্রমে ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে অর্জিত পয়েন্ট বিবেচনায় আনতে হবে।
ভর্তি ফি মফস্বল/পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশনচার্জসহ সর্বসাকুল্যে ১ হাজার টাকা, পৌর (জেলা সদর) এলাকায় ২ হাজার টাকা এবং ঢাকা ছাড়া অন্য মেট্রোপলিটন এলাকায় ৩ হাজার টাকার বেশি ফি নেওয়া যাবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থী ভর্তিতে পাঁচ হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না।
ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আংশিক এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও এমপিও বর্হিভূত শিক্ষকদের বেতনভাতা দেওয়ার জন্য ভর্তির সময় মাসিক বেতন, সেশন চার্জ ও উন্নয়ন ফি বাবদ বাংলা মাধ্যমে নয় হাজার টাকা এবং ইংরেজি মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
নীতিমালা অনুযায়ী, উন্নয়ন খাতে কোনো প্রতিষ্ঠান তিন হাজার টাকার বেশি নিতে পারবে না। সরকারি কলেজগুলো পরিপত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ফি সংগ্রহ করবে।
দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ফি যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে বলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অনুমোদিত ফি’র বেশি নেওয়া যাবে না উল্লেখ করে নীতিমালায় বলা হয়েছে, অনুমোদিত সকল ফি রশিদের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা দেখতে ক্লিক করুন
সৌজন্যেঃ বাংলাদেশ জার্নাল