জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ ৪% প্রতিবাদের ঝড়
মাউশিতে ৩০/০৪/২০১৯ ইং তারিখে ডিজি মহোদয়ের সাথে বেসরকারি শিক্ষক নেতাদের মিটিং ফলপ্রসূ না হওয়ার কারণে শিক্ষকদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রয়া দেখা দিয়েছে। যার ফলে বেসরকারি শিক্ষকরা বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করিতেছে। আজ ০১/০৫/২০১৯ ইং তারিখ ” বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ” (নজরুল) এর উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবে পালন করা হলো মানব বন্ধন ও আলোচনা সভা।
উক্ত মানব বন্ধন ও আলোচনার মুল উদ্দেশ্য ছিল বেসরকারি শিক্ষকদের অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ সহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে।
আলোচনায় ছিল বেসরকারি শিক্ষকদের দুঃখ দুর্দশার বর্ণনা । যা সত্যিই বেদনাদায়ক। তুলে ধরা হয় অতীত থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বঞ্চিত হওয়ার কাহিনী ।দেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু বেসরকারি শিক্ষকরা পিছিয়ে যাচ্ছে। যা বর্তমান সময়ে কোন মতেই গ্রহণ যোগ্য নয়।
শিক্ষকরা হতাশার কন্ঠে তুলে ধরেন তাদের জীবন ধারা। সরকারি চাকরি জীবিদের বেতন বাড়ে আর বেসরকারি শিক্ষকদের বেলায় বেতন কমে। এটা একটা ম্যাজিক ম্যাজিক খেলার মত।
সরকারি চাকরি জীবিরা পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস পায় কিন্তু বেসরকারি শিক্ষকরা ঈদ বোনাস পায় মূল বেতনের ২৫ শতাংশ। এটা সৎ মায়ের মত আচরণ নয়।
সরকারি চাকরি জীবিরা চিকিৎসা ভাতা পান ১৫০০ টাকা আর বেসরকারি শিক্ষকরা পান মাত্র ৫০০ টাকা। সরকারি শিক্ষকরা ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ হারে বাড়ি ভাড়া পান আর বেসরকারি শিক্ষকরা বাড়ি ভাড়া পান মাত্র ১০০০ টাকা।
শিক্ষকদের প্রশ্ন ছিল বর্তমান সময়ে ১০০০ টাকায় বাড়ি ভাড়া পাওয়া যায় কিনা। যদি পাওয়া না যায় তাহলে সরকারি ন্যায় বাড়ি ভাড়া করার জোর দাবি জানানো হয়।
আর ৫০০ টাকায় চিকিৎসা করানো যায় কিনা তাও ফুটে ওঠে শিক্ষকদের মুখে। বর্তমান অবস্থায় ডাক্তারদের সর্বনিম্ন ফি যেখানে ৫০০ টাকা। তাহলে ঔষধ ক্রয় করার টাকা পাব কোথায়?
শিক্ষকরা আরও বলেন এমনিতেই আমাদের এই সামান্য টাকায় জীবন চলে না তারপর আবার শুরু হয়ে গেল কর্তন কর্তন খেলা। যা আমাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনকে মানবেতর জীবনযাপনে পরিণত করবে। বাস্তব জীবনে নেমে আসবে সীমাহীন দুর্ভোগ।
স্বাধীনতার এত বছরে ও বেসরকারি শিক্ষকদের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হলো না। অতিরিক্ত ৪ শতাংশ হারে কর্তন বন্ধ করার পক্ষে শুরু হয় তুমুল প্রতিবাদ। বেসরকারি শিক্ষক সমাজ অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন মানি না মানব না এই স্লোগান ধরে।
আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসের ঘোষণা চান শিক্ষকরা। অবসর ও কল্যান তহবিল প্রথা বিলুপ্ত করে বেসরকারি শিক্ষকদের পেনশনের আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়। অবসর ও কল্যান তহবিল যেহেতু অকল্যানে পরিণত হয়েছে তাহলে কেন এই অবসর ও কল্যান তহবিল? এমন প্রশ্ন উঠে এসেছে শিক্ষকদের কাছ থেকে।
এই অবসর ও কল্যান তহবিল আমরা চাই না স্লোগান ধরা হয়। স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে জাতীয় প্রেসক্লাব।
শিক্ষকরা বলেন জাতীয়করণ করতে যেহেতু সরকারকে অতিরিক্ত খরচ করতে হবে না। বরং বর্তমানে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয়ের হিসাব নিয়ে নিলে লাভই হবে। তাহলে কেন জাতীয়করণ নয়?শিক্ষকরা আরও বলেন বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শিক্ষা ব্যবস্থায় বৈষম্য মানি না মানব না। অনতিবিলম্বে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করে বেসরকারি শিক্ষকদের সুস্থ ভাবে বাঁচতে দেন। শিক্ষকরা আরও বলেন এই অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কর্তন বন্ধ করা না হলে ঈদের পর থেকে লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
আসতে পারে অনশন, অবস্থান কর্মসূচী এবং সর্বশেষ প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলানো কর্মসূচি। যা শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হুমকি স্বরূপ।
যার কারণে শিক্ষা ব্যবস্থায় স্থবিরতা নেমে আসতে বাধ্য।
উক্ত মানব বন্ধন ও আলোচনা সভায় যারা বক্তব্য রাখেন তারা হলো - বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি জনাব নজরুল ইসলাম রনি স্যার, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মেজবাহুল ইসলাম প্রিন্স,সিনিয়র সহ সভাপতি গাজী মামুন আল জাকির, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মোঃ আবুল হোসেন, সহকারী মহাসচিব মঈনুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মোঃ আবুল বাশার নাদিম, মোঃ তরিকুল ইসলাম, মোঃ কামরুল হোসেন, আমিনুর রহমান,আফজালুর রশিদ প্রমুখ।
তাই নেতৃ বৃন্দ কর্তৃপক্ষের বর্তমান সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বেসরকারি শিক্ষকদের দাবি গুলো বিবেচনায় এনে দ্রুত তার সমাধান কামনা করেন।
শিক্ষা প্রতিদিন/বাশিস/মোঃ আবুল হোসেন