বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা এখন আন্দোলনমুখী
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আজও পেল না যথাযথ সুযোগ সুবিধা। সরকারি এবং বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্য। বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, ঈদ বোনাসের মধ্যে চরম বৈষম্য বিরাজমান। নেই সন্তানদের শিক্ষা ভাতা। নেই স্বল্প সুদে হাউজ লোন। নেই পেনশন ব্যবস্থা।
আছে এক কালীন অবসর ও কল্যান তহবিল নামে সর্বশেষ স্কেলের ১০০ মাসের বেতনের সমতুল্য টাকা। সরকারি শিক্ষকরা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নির্দিষ্ট একটি ভাতা পায় প্রতি মাসে। কিন্তু বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা যা পায় তাও আবার টাকার সংকট দেখিয়ে বছরের পর বছর ফাইল আটকিয়ে রাখা হয়।
শিক্ষকদের করতে হয় মানবেতর জীবনযাপন। বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় আজকাল চরম অবস্থা বিরাজমান। বেসরকারি শিক্ষকরা আজ অবিভাবকের সংকটে। কেউ নেই শিক্ষা ব্যবস্থায় সমতায়ন করার। আছে শুধু কীভাবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের নিম্নমুখী করা যায়। যাতে মাথা চড়া দিয়ে উপরে উঠতে না পারে।
তাইতো আজ বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থায় নেমে এসেছে কলির সন্ধা।
বাস্তবতার পেক্ষিতে আজ আকাশে বাতাসে একটি ধ্বনিই আজ শোনা যায় বৈষম্য বিহীন বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা চাই।
বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৫ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট দিয়ে তা থেকে আবার অতিরিক্ত ৪ শতাংশ হারে জানুয়ারি মাস থেকে কর্তন করা হচ্ছে অবসর ও কল্যান তহবিলের নামে। যা কল্যানের চেয়ে অকল্যানই বেশি হচ্ছে।
তাই বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ সহ অতিরিক্ত কর্তনের প্রজ্ঞাপন চিরতরে বাতিল চায়।
সরকারি চাকরির কাছ থেকে কতটুকু কর্তন করা হয় জানা নেই। কিন্তু ওরা যা সুযোগ সুবিধা পায় বেসরকারি শিক্ষকরা তা থেকে সম্পূর্ণ রুপে বঞ্চিত।
আজ সারা বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষক সমাজ জেগে উঠেছে যা রোধ করার নয়। জেনারেল শাখার পাশাপাশি কারিগরি শাখা ও আজ জেগে উঠেছে অতিরিক্ত কর্তনের অপচেষ্টা বন্ধ করতে।
এখন কর্তন কর্তন খেলা বন্ধ করার জন্য শিক্ষক সমাজ আজ রাস্তায় অবস্থান নিচ্ছেন। প্রতিটি বেসরকারি শিক্ষক সংগঠন আজ জেগে উঠেছে।প্রতিবাদ স্বরূপ ঘোষণা করিতেছে মানব বন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, অনশন, সর্বশেষ আসতে পারে প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলানোর কর্মসূচি।
যা কোনো দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য শুভলক্ষণ নয়।
অনতিবিলম্বে এই অতিরিক্ত কর্তন বন্ধ সহ ন্যায্য দাবী গুলো মেনে নেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করে শিক্ষা ব্যবস্থার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
বেসরকারি শিক্ষকদের পেনশনের আওতায় এনে বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরির শেষ সময়টুকু সুস্থ ভাবে বাঁচতে দেন।
শেষ সময়ে এসে মানবেতর জীবনযাপন করা সত্যিই বেদনাদায়ক। তাইতো আজ দেখা দিচ্ছে শিক্ষক আন্দোলনের বিস্ফোরণ।
এই বাস্তবতার ফলে আজ শিক্ষকরা রাজপথে নেমে আসছে । আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ সহ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে মাঠে নামবে বাশিস ( নজরুল) সহ দাবির আদায়ের পক্ষের সংগঠন গুলো।
দাবির আদায়ের পক্ষে আপোষহীন সংগঠন বাশিস।
তাই অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ সহ পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাস, চিকিৎসা ভাতা, বদলি এবং সমগ্র বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (নজরুল) এর সঙ্গে যুগপৎভাবে আন্দোলনে সাড়া দিয়ে আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর রাজ পথে নামবে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ বাশিসের নেতৃত্বে।
আগামী ১৮/০৫/২০১৯ ইং তারিখে ইফতার পার্টি ও সংবাদ সম্মেলন করার আয়োজন করেছে বাশিস। এই কর্মসূচীকে সফল করার জন্য বেসরকারি শিক্ষক সমাজ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে জেগে উঠেছে। তাইতো ১৮ মে বিকাল ৪ টায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ বাশিসের সাথে জাতীয় প্রেসক্লাবে সমবেত হবে দাবি আদায়ের পক্ষে আলোচনা করার জন্য।
দাবি আদায়ে আর কোন রকম ছাড় দিবে না বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ। তাই নিজ অধিকার আদায়ে এখন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ সোচ্চার এবং যেকোনো মূল্যে দাবি আদায়ে প্রস্তুত।
সারা দেশ এখন দাবি আদায়ে উত্তাল। অতিরিক্ত ৪% কর্তন বন্ধ সহ প্রত্যেকটি দাবি আদায় করার পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক সমাজ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা আর ঘরে ফিরে যাবে না। তাইতো একটি কথাই চারদিকে শোনা যায় দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজ পথ ছাড়ব না ঘরে ফিরে যাব না। ঐ স্লোগানে আজ সারা বাংলাদেশ জেগে উঠেছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় শিক্ষকদের ওপর অবিচার মানি না মানব না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ এই যে, আপনি বেসরকারি শিক্ষকদের দাবি দাওয়া মেনে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ করুন এবং সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তববায়ন করুন। শিক্ষক সমাজ আপনার সিদ্ধান্তের ওপর চেয়ে আছে।
আমরা বেসরকারি শিক্ষকরা চিরদিন আপনার আজ্ঞাবাহ হয়ে থাকব।
শিক্ষা ব্যবস্থার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
লেখক ও কলামিস্টঃ
মোঃ আবুল হোসেন
সিনিয়র যুগ্ম- মহাসচিব
বাশিস ( নজরুল)