কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মাধ্যমে প্রভাষকদের সহঃ অধ্যাপক ও সহকারি শিক্ষকদের সহঃ প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিন

চাকুরীর ক্ষেত্রে পদোন্নতি একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়।কর্মস্পৃহা ও যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা মুল্যায়নে পদোন্নতি ব্যবস্থার গুরুত্ব অপরিসীম। বেসরকারি কলেজের প্রভাষকদের অনুপাতের মাধ্যম কলেজভিত্তিক পদোন্নতি হওয়ায় সঠিক যোগ্যতা ও দক্ষতার মুল্যায়ন হচ্ছে না। তাই কেন্দ্রীয়ভাবে পদোন্নতি পরিক্ষার মাধ্যমে প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক বাছাই করা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার স্বার্থে জরুরি।
অন্যদিকে স্কুল, মাদ্রাসা সহকারী শিক্ষকরা টাইমস্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে সিনিয়র শিক্ষক পদবি ব্যবহার করে যা শুধু শান্তনা পুরষ্কার বস আক্ষেপ ছাড়া কিছুই না।কারণ সিনিয়র স্কেল পেলেও সে সহকারী শিক্ষক। এই পদবি এমপিও শীটে বা অন্যান্য জায়গায় বিদ্যমান। স্কেল অনুসারে পদবি সংকট নিরসনে এই বৈষম্য দুর করতে সহকারী শিক্ষকদের (সিনিয়র স্কেল প্রাপ্ত) সরাসরি কিংবা পরিক্ষার মাধ্যমে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বিষয়টি জাতির কারিগর শিক্ষকদের ইজ্জৎ ও মানসম্মানের বিষয়। অনেক ছাত্র বা সন্তান পরে চাকরিতে যোগ দিয়ে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সহ প্রধান হচ্ছেন কমিটির মাধ্যমে। সেখানে অনেক অনিয়ম হয়।তাই কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষা নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে উক্ত পদটি পদোন্নতি যোগ্য ঘোষণা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
কলেজভিত্তিক পদোন্নয়নের ফলে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে কিছু প্রতিষ্ঠানে অনেকে সমান সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।অনুপাত প্রথার ফলে অনেক সিনিয়র প্রভাষকদের ভালমানের কলেজে চাকরি করা সত্ত্বেও পদোন্নতি বঞ্চিত হচ্ছেন।পরে চাকরিতে যোগদান করেও আগেই সহকারী অধ্যাপক হচ্ছেন।ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে পিতা/বাবা প্রভাষক কিন্তু ছেলে সহকারী অধ্যাপক পদে আসীন হয়েছেন। আবার বয়সে জুনিয়র অথবা সাবেক ছাত্র পদোন্নতি পেয়ে সহকারী অধ্যাপক হয়েছেন। যা কাম্য নয়।বিষয়টি স্পর্শকাতর ও লজ্জাজনক। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে সুষ্ঠ সুরাহার পথ বের করবেন।
এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুসারে সহযোগী অধ্যাপক পদ সৃজন করার উদ্যোগ সরকারের একটি যোগান্তকারি ও ইতিবাচক পদক্ষেপ। দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি বিনীত অনুরোধ করছি। কিন্তু সহযোগী অধ্যাপকের ক্ষেত্রে পুনরায় প্রস্তাবিত অনুপাত প্রথা ৩:১ আবারো ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে শিক্ষকদের অবমুল্যায়ন ও লাঞ্চনার কারন হতে পারে।তাই অনুপাত বাতিল করে সরকারের অধীন কেন্দ্রীয় পরীক্ষার মাধ্যমে সহযোগী অধ্যাপক পদায়ন হবে প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
২০১৮ এমপিও নীতিমালা জারী ও কিছু শর্তারোপ করায় বিপাকে পরছেন লক্ষাধিক যোগ্য প্রার্থী।নীতিমালায় উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে অধ্যক্ষ ও ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে ৫:২ অনুপাতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ সর্বমোট ১২বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন
প্রার্থীরাই আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।আবার ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ হতে হলে উচ্চমাধ্যমিক কলেজের অধ্যক্ষ/ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে ৩ বছরের অভিজ্ঞ প্রার্থীরাই যোগ্য।এমন শর্তানুযায়ী পুর্বের আবেদনযোগ্য প্রার্থী প্রভাষকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে।ফলে সহজে সহঃঅধ্যাপকও হতে পারবে না বিধায় সারা জীবনে অধ্যক্ষ হতে পারবে না।বেলা শেষে প্রভাষক পদবী নিয়েই অবসর যেতে হচ্ছে।
সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির প্রধান শর্ত ৮ বছর প্রভাষক পদে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তি ৫:২ অনুপাতের ভিত্তিতে ৭ জন প্রভাষকের মধ্যে মাত্র ২ জন সহঃঅধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাবেন যা অটো প্রমোশন(কোন রকম পদোন্নতি পরিক্ষা ছাড়া)।কোন কলেজে ৪/৫জন প্রভাষক থাকলে মাত্র ১ জন সহঃঅধ্যাপক হবেন।কমিটির সমস্যা ও অনুপাতের বেড়াজালের কারনে অনেক কলেজে সহকারী অধ্যাপক ১ জনও নেই।বাকিরা যোগ্য ও অভিজ্ঞ হওয়া সত্তেও জীবনে অধ্যক্ষ হতে পারবে না,যা কালো প্রথা বা কালো আইন।ফলে সহকারী অধ্যাপক ১টি জেলায় হাতেগুনা কয়েকজন প্রার্থী ও সারাদেশে অল্প সং্খ্যক।
*সর্বোপরি, অনুপাত প্রথা বাতিল করতে হবে নতুবা ৮/১২/১৫ বছর অভিজ্ঞ প্রভাষকদের জন্য সহঃঅধ্যাপক,সহযোগী অধ্যাপক পদে পদায়নের জন্য উম্মুক্ত রাখতে হবে।।সহকারি বা সিনিয়র শিক্ষকদের কেন্দ্রীয়ভাবে পরিক্ষা কিংবা অন্যভাবে পদোন্নতি যোগ্য পদ সৃষ্টি করতে হবে।
★★★মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও সরকার বাহাদুরের প্রতি অনুরোধ প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপকদের অনুপাত প্রথা ৫:২ ও ৩:১ বাতিল করে কেন্দ্রীয়ভাবে পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতির ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করছি।সিনিয়র সহকারি শিক্ষকদের পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন করার জন্য সবিনয় প্রার্থনা করছি। এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটি ব্যতিরেকে বৈষম্য দুরীকরনে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ ও নিয়ন্ত্রণ কামনা করছি।
অনুরোধক্রমে,
মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম,প্রভাষক (ইংরেজি)
সমষপুর কলেজ, মুন্সিগঞ্জ
ও
সাংগঠনিক সম্পাদক,
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (নজরুল রনি)
কেন্দ্রীয় কমিটি।