শিক্ষকদের মানোন্নয়ন এবং পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষিত জাতি গঠন শিক্ষকরাই করে থাকে। আর এই শিক্ষকরা যদি দক্ষ না হয় তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত ফল আশা করা যায় না। শিক্ষকরাই দেশ উন্নয়নের রুপকার। শিক্ষকই উন্নত জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
তাই আগে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য পূরণ হবে। নতুবা শিক্ষা ব্যবস্থার আসল উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে বাধ্য।
পূর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা ঘোষণা না করলে শিক্ষকদের মানোন্নয়ন সম্ভব নয়। ৪৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া, ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা, সন্তানদের শিক্ষা ভাতা, কর্তন বন্ধ করে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পেনশনের আওতায় আনার ব্যবস্থা অতীব জরুরি। তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা গতিশীল হবে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন - শিক্ষকদের পেনশনের আওতায় আনার ব্যবস্থা হচ্ছে। কখন আনা হবে তার কোন দিকনির্দেশনা পেলাম না।
পূর্ণাঙ্গ ঈদ বোনাসের জোর দাবি জানাচ্ছি। বৈষম্য দূরীকরণ করলে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ সঞ্চার হবে। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হবে দেশ। পরিচিত পাবে সারা বিশ্বে বৈষম্যহীন শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে। বিশ্বের দরবারে পাবে সীমাহীন মর্যাদা।
বর্তমানে যে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু আছে তা অধিকাংশ শিক্ষকরাই দক্ষ নয়। সৃজনশীল পদ্ধতি অনেক শিক্ষকই ভালো বুঝেন না। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই প্রকৃত শিক্ষার স্বাদ পাওয়া যাবে।
কথায় আছে নিজে সাঁতার না জানলে অপরকে কীভাবে শিখাবে সাঁতার?
শিক্ষকদের পিছনে সময় ব্যয় করলে লাভ ছাড়া ক্ষতি হবে না। দেশ এগিয়ে যাবে মান সম্মত শিক্ষার মাধ্যমে ।
শিক্ষকদের তাই বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। দক্ষ শিক্ষক ছাড়া উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা আশা করা যায় না। মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করতে দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন।
যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য দক্ষ শিক্ষক তৈরি করতে হবে। দক্ষতাই সফলতার চাবি কাঠি।
জাতি গড়ার কারিগর যদি দুর্বল হয় তাহলে উন্নত জাতি গঠন সম্ভব নয়।
শিক্ষকরাই শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ। আর শিক্ষকরাই যদি অদক্ষ হয় তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে কি করে ?
শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হলে দুর্বল জাতি গড়ে উঠবে। এ মন্ত্র মনে রেখে শিক্ষকদের মানোন্নয়ন করতে হবে।
শুধু প্রশিক্ষণ হলে চলবে না সাথে বদলি পদ্ধতি চালু করা প্রয়োজন। তাতে শিক্ষকদের পাঠদানের প্রতি স্পীড বেড়ে যাবে। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি পাবে।
কেন্দ্রীয় ভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা অতীব জরুরি। পর্যায়ক্রমে জেলা, থানা এবং সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে শিক্ষকরা দক্ষতার সহিত পাঠদানে সক্ষম হবে।
শিক্ষা ব্যবস্থায় আসবে আমুল পরিবর্তন। শিক্ষার্থীরা হবে উপকৃত। শিক্ষার্থীর ঘটবে মেধার বিকাশ। আর মেধাবীরা গড়বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ।
প্রতিটি থানায় কমপক্ষে মাসে একবার হলে ও শিক্ষকদের সম্মিলিত আলোচনার ব্যবস্থা করলে হয়তো বা শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হতে পারে।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে একবার হলেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি বলদে যাবে। যা শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
কথায় আছে যে দেশ যত বেশি শিক্ষিত সে দেশ তত বেশি উন্নত। তাই শিক্ষকদের গুণগত মান বৃদ্ধির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া একান্ত কাম্য।
আমাদের বাংলাদেশ আজ বর্তমান বিশ্বের মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছে গেছে এবং উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় দ্বিতীয়। এই উন্নয়ন আমাদের গর্ব। শিক্ষকদের উন্নয়নের ধারায় সংযুক্ত করতে হবে। তাই দক্ষ শিক্ষক গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করা বিশেষ প্রয়োজন।
এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রয়োজন মানোন্নয়ন শিক্ষা ব্যবস্থা। আর তার জন্য প্রয়োজন শিক্ষকদের মানোন্নয়ন করা। এর বিকল্প কিছুই হতে পারে না। মনে রাখতে হবে শিক্ষক ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা অচল।
বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিক্ষার মানোন্নয়ন অবশ্যই প্রয়োজন। নতুবা টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। বর্তমান বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ তা থেকে পিছিয়ে এটা মোটেও শুভলক্ষণ নয়। তাই এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
সৃজনশীল পদ্ধতিকে এগিয়ে নিতে সৃজনশীল শিক্ষক তৈরি করা প্রয়োজন। শিক্ষকদের উন্নয়ন সাধিত হলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে নতুবা নয়।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বর্তমান সংসদ সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন -গাধাকে পিটিয়ে যেমন ঘোড়া করা যায় না। গাধা গাধাই থেকে যায়।
তেমনি অদক্ষ শিক্ষক দ্বারা উন্নত শিক্ষা আশা করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়।
প্রতিটি শিক্ষককে দক্ষ শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলা এবং সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে গতিশীল করার বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি কর্তৃপক্ষের নিকট। আশা করি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুবিবেচনা করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
লেখকঃ
মোঃ আবুল হোসেন
সিনিয়র যুগ্ম -মহাসচিব
বাশিস (নজরুল)
কেন্দ্রীয় কমিটি।