উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তি শয্যাশায়ী, উচ্চ শিক্ষার পথ কি বন্ধ হবে লায়লার?

নিজস্ব প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিনিধি,
প্রকাশিত: ১২:৪০ পিএম, ২ জুন ২০১৯

উপার্জনক্ষম একমাত্র ব্যক্তি শয্যাশায়ী, উচ্চ শিক্ষার পথ কি বন্ধ হবে লায়লার?
সামাউন আলী || সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ
সবাই যখন পরিবার-পরিজনদের সাথে ঈদ উদযাপন নিয়ে ব্যস্ত, তখন লায়লাদের ঘরে সে ব্যস্ততা মুটেও স্পর্শ করেনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তি লায়লার পিতা শাহাদুল ইসলাম ওরফে হাদু প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী। তাই তো প্যারালাইজড পিতার উপার্জন বন্ধ হওয়ার পাশাপাশি পঙ্গু হয়ে গেছে পুরো পরিবার। সে সাথে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়া মেধাবি লায়লার উচ্চ শিক্ষার পথও বন্ধের পথে।

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ভাগনাগরকন্দি গ্রামের শাহাদুল ইসলাম ওরফে হাদু। দুই কন্যা সহ মোট চারজনের পরিবার। শাহাদুলের পরিবার চলে তার উপার্জনে। সারা দিন ভ্যান চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়েই চলতো পরিবারের চাহিদা। কিন্তু গত তিন মাস ধরে হঠাৎ করে প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন সাহাদুল। বন্ধ হয়ে গেছে সকল আয় উপার্জন। বড় মেয়ে লায়লার জীবনও কোন সিনেমার কাহিনীকে হার মানাবে। জীবন কি জিনিস বুঝে উঠার আগেই সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রীর বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী গ্রামে। কিন্তু ছেলে পরিবারে সাথে বনিবনা না হওয়ার কারণে বিচ্ছেদ হয় সে সংসার। আবারো পড়াশনায় মনোযোগি হওয়ার জন্য ভাগনাগরকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয় লায়লা। কিছু দিন চলার পর আবারো বন্ধ হয়ে যায় লেখাপড়া। কিন্তু মনোবল হারায়নি লায়লা। আবারো ২০১৮ সালে একই বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয় লায়লা। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক্যালে। বর্তমানে সেখানে কম্পিউটার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সে। আর লায়লা ছোট বোন বিপাশা এবারে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। তবে পিতা হঠাৎ প্যারালাইজড হয়ে শয্যাশায়ী হওয়ার কারনে পড়াশুনার খরচ বহন করতে না পারার কারনে রাজশাহী থেকে চলে আসতে হয়েছে তাকে। বিত্তশালীদের সহযোগিতা না পেলে হয়তো লায়লার উচ্চ শিক্ষার পথ হয়তো বন্ধের পথে। কারণ তার লেখা পড়ার খরচ চালানোর সামর্থ নেই পরিবারের।

এদিকে, সবাই যখন পরিবার-পরিজনদের সাথে ঈদ উদযাপন নিয়ে ব্যস্ত, তখন লায়লাদের ঘরে সে ব্যস্ততা মুটেও স্পর্শ করেনি। নতুন জামা তো দুরের কথা সুচিকিৎসার অভাবে দিন দিন খারাপ পরিস্থিতির দিকে ধাপিত হচ্ছে লায়লার পিতার শারীরিক অবস্থা। চোখে-মুখো অন্ধকার দেখা এই পরিবারটির দিন কাটছে হতাশ আর অনিশ্চিতায়। সবাই যখন পরিবার-পরিজনদের সাথে ঈদের আনন্দ করবে তখন হয়তো লায়লার পরিবারকে সে দু:খ-কষ্ট কুঁড়ে কুঁড়ে খাবে। সমাজের বিত্তশালীরা এগিয়ে আসলে তবেই দ্বার উম্মোচিত হতে পারে লায়লার পরিবারের।

শিক্ষা প্রতিদিন/০২জুন/ সা.আ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)