শিক্ষার মান উন্নয়নে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন
শিক্ষকদের মানোন্নয়ন ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন সম্ভব। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা যেহেতু সৃজনশীল পদ্ধতিতে সেহেতু প্রশিক্ষণ ছাড়া সঠিক পাঠদান সম্ভব নয়। এই সৃজনশীল পদ্ধতিতে অনেকেই দক্ষ নন। দক্ষ শিক্ষক ছাড়া উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা আশা করা যায় না।
আগে শিক্ষকদের কর্মদক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তারপর শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন সম্ভব হবে। উন্নত জাতি গঠনে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। আর উন্নত জাতি গঠনে শিক্ষকরাই তার প্রাণ। আর এই শিক্ষকরা যদি অদক্ষ থেকে যায় তাহলে প্রকৃত শিক্ষা কীভাবে আশা করব বলুন?
শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। শিক্ষা ছাড়া জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। শিক্ষিত জাতি গঠন শিক্ষকরাই করে থাকে। আর এই শিক্ষকরা যদি দক্ষ না হয় তাহলে শিক্ষা ব্যবস্থার কাঙ্ক্ষিত ফল আশা করা যায় না। শিক্ষকরাই দেশ উন্নয়নের রুপকার। শিক্ষকই উন্নত জাতি গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
তাই আগে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই শিক্ষার আসল উদ্দেশ্য পূরণ হবে। নতুবা শিক্ষা ব্যবস্থার আসল উদ্দেশ্য পূরণে ব্যর্থ হতে বাধ্য। প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থার প্রাণ সঞ্চার হবে। প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হবে দেশ। পরিচিত পাবে সারা বিশ্বে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে। বিশ্বের দরবারে পাবে সীমাহীন মর্যাদা।
উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষ শিক্ষক হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে দেশের বাইরে থেকে শিক্ষক আনতে হবে না। তাহলেই দেশের এই শিক্ষকদের দ্বারাই প্রকৃত শিক্ষার স্বাদ পাওয়া যাবে।
কথায় আছে যে, দেশীয় পণ্য, কিনে হও ধন্য। দেশের এই শিক্ষকদের দ্বারাই বাংলাদেশ একদিন বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। বর্তমান সময়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় যে টুকু অপূর্ণ রয়েছে তাও পূরণ হয়ে যাবে যদি শিক্ষকদের মানোন্নয়ন করা সম্ভব হয়।
শিক্ষকদের তাই বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। দক্ষ শিক্ষক ছাড়া উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা আশা করা যায় না। মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরি করতে দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন। যুগোপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য দক্ষ শিক্ষক তৈরি করতে হবে। দক্ষতাই সফলতার চাবি কাঠি।
জাতি গড়ার কারিগর যদি দুর্বল হয় তাহলে উন্নত জাতি গঠন সম্ভব নয়।
শিক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হলে দুর্বল জাতি গড়ে উঠবে। এ মন্ত্র মনে রেখে শিক্ষকদের মানোন্নয়ন করতে হবে। কেন্দ্রীয় ভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা অতীব জরুরি। পর্যায়ক্রমে জেলা, থানা এবং সর্বশেষ প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে শিক্ষকরা দক্ষতার সহিত পাঠদানে সক্ষম হবে।
শিক্ষা ব্যবস্থায় আসবে আমুল পরিবর্তন। শিক্ষার্থীরা হবে উপকৃত। শিক্ষার্থীর ঘটবে মেধার বিকাশ। আর মেধাবীরা গড়বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় দক্ষ শিক্ষক অতীব জরুরি।
প্রতিটি থানায় কমপক্ষে মাসে একবার হলে ও শিক্ষকদের সম্মিলিত আলোচনার ব্যবস্থা করলে হয়তো বা শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হতে পারে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে একবার হলেও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতি বলদে যাবে। যা শিক্ষার মান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
কথায় আছে, যে দেশ যত বেশি শিক্ষিত, সে দেশ তত বেশি উন্নত। তাই শিক্ষকদের গুণগত মান বৃদ্ধির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া একান্ত কাম্য। আমাদের বাংলাদেশ আজ বর্তমান বিশ্বের মধ্যম আয়ের দেশে পৌঁছে গেছে এবং উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় দ্বিতীয়। এই উন্নয়ন আমাদের গর্ব।
শিক্ষকদের উন্নয়নের ধারায় সংযুক্ত করে। দক্ষ শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জোর দাবি জানাচ্ছি কতৃপক্ষের নিকট। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে প্রয়োজন শিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়ন। আর তার জন্য প্রয়োজন শিক্ষকদের মানোন্নয়ন করা।
বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে শিক্ষার মানোন্নয়ন অবশ্যই প্রয়োজন। নতুবা টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
বর্তমান বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে। পক্ষান্তরে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে এটা মোটেও শুভলক্ষণ নয়। তাই এ ব্যাপারে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
সৃজনশীল পদ্ধতিকে এগিয়ে নিতে সৃজনশীল শিক্ষক তৈরি করা প্রয়োজন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট বিনীত অনুরোধ এই যে, দেশীয় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ শিক্ষক হিসেবে গড়ে তুলুন দেখবেন দেশের বাইরে থেকে শিক্ষক আনতে হবে না। শিক্ষার মানোন্নয়নে আপনি যে পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলেছেন তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছেন শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য। তবে দেশীয় শিক্ষকদের দক্ষ শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার জোর দাবি জানাচ্ছি আপনার নিকট।
লেখক ও কলামিস্টঃ
মোঃ আবুল হোসেন
সিনিয়র যুগ্ম -মহাসচিব
বাশিস (নজরুল)
কেন্দ্রীয় কমিটি